অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আফগানিস্তানের সঙ্গে সকল বাণিজ্যিক লেনদেনের অনুমতি দিল যুক্তরাষ্ট্র


ফাইল - আফগানিস্তানের কালা-ই-নাউ এ মানবিক সহায়তার জন্য আবেদন করতে কয়েক শত আফগান পুরুষ জড়ো হয়েছে৷১৪ ডিসেম্বর ২০২১। 2021-
ফাইল - আফগানিস্তানের কালা-ই-নাউ এ মানবিক সহায়তার জন্য আবেদন করতে কয়েক শত আফগান পুরুষ জড়ো হয়েছে৷১৪ ডিসেম্বর ২০২১। 2021-

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ আফগানিস্তানের সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যিক লেনদেনের অনুমোদন দিয়ে শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) একটি নতুন সাধারণ লাইসেন্স জারি করেছে। সম্প্রতি তালিবান ও হাক্কানি গোষ্ঠির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় ছাড়ের অংশ হিসেবে এই ঘোষণা এসেছে।

ট্রেজারি বিভাগের নতুন এই লাইসেন্সটি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই বিভাগ থেকে জারিকৃত সপ্তম লাইসেন্স। এতে, “আফগানিস্তান এবং এর সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সমস্ত লেনদেনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে”, ট্রেজারি বিভাগ বলেছে।

যাহোক, এটি এখনো তালিবান, হাক্কানি গোষ্ঠী, সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং ট্রেজারি বিভাগ দ্বারা নিষিদ্ধ ব্যক্তিদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছে।

ট্রেজারি বিভাগ ও আফগানিস্তানে ব্যবসায় জড়িত বেসরকারি খাতের নির্বাহীদের মধ্যে আলোচনার পরে এই পদক্ষেপটি এসেছে। এটি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে দেওয়া একাধিক নিষেধাজ্ঞা ছাড়ের মতোই আরেকটি পদক্ষেপ।

“এই ভয়াবহ সংকটের আলোকে আমাদের এই পদক্ষেপে আমরা স্বীকার করেছি, তালিবান, হাক্কানি এবং অন্য বিপজ্জনক ব্যক্তিদের আর্থিক সংস্থান বন্ধ করার পাশাপাশি, ওই নিষেধাজ্ঞাগুলোর ফলে বাণিজ্যিক ও আর্থিক কার্যকলাপকে বাধাগ্রস্ত করে এমন উদ্বেগের সমাধান করা অপরিহার্য”, ডেপুটি ট্রেজারি সেক্রেটারি ওয়ালি আদিয়েমো এক বিবৃতিতে বলেন।

১৯৯০-এর দশকে তালিবানের প্রথমবার ক্ষমতায় আসার সময় থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চালু রয়েছে। তালিবান ও হাক্কানি উভয় গোষ্ঠীকে ট্রেজারি বিভাগ বিশেষভাবে মনোনীত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে।

“হাজারো আফগান ক্ষুধার্ত”

অগাস্টে তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর, ট্রেজারি বিভাগ আফগানিস্তানকে একটি বিচ্ছিন্ন অর্থনৈতিক এবং মানবিক সংকট মোকাবিলায় সহযোগিতা করতে একাধিক নিষেধাজ্ঞা ছাড় দিয়ে ঘোষণা জারি করেছে।

“অনেক আফগান না খেয়ে আছে, অনেক আফগান শীতে কষ্ট পাচ্ছে; আমাদের সকলকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে”, সাধারণ অনুমতিপত্র ঘোষণার সময় একটি সংবাদ সম্মেলনে একজন জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন।

এ ছাড়াও একটি প্রচলিত ধারণা এই যে, আফগানিস্তানের এই মানবিক সংকটের সঙ্গে দেশটির অর্থনৈতিক সংকটের অবনতির সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে মজুত আফগানিস্তানের সাত বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ স্থগিত করার ফলে অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, দেশটির অর্থনীতির সচল থাকা জরুরি”।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে যুক্তরাষ্ট্রে মজুত আফগান সম্পদ ভাগ করে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় নিহতদের পরিবারের জন্য ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার মুক্ত করে দেন, বাকিটা আফগানিস্তানের জন্য একটি মানবিক তহবিল হিসেবে বরাদ্দ করেন।

তালিবান এবং অন্য আফগান নেতারা এই পদক্ষেপের নিন্দা করেন। তাদের মতে এই অর্থের মালিক আফগানিস্তানের জনগণ। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, ৯/১১–র ভুক্তভোগীদের কাছে তহবিল স্থানান্তর করার যেকোনো সিদ্ধান্ত আদালতের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হবে।

“এই ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের সুনির্দিষ্ট ব্যবহারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি”, প্রশাসনের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন।

আফগানিস্তান এবং এই অঞ্চলের আফগান শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তায় অক্টোবর থেকে বাইডেন প্রশাসন ৭৮০ মিলিয়নেরও বেশি ঘোষণা করেছে।

জাতিসংঘ জানুয়ারিতে আফগানিস্তানের জন্য ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মানবিক সহায়তার জন্য একটি আবেদন শুরু করে এবং বলেছে যে, দেশটির ৩৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার অর্ধেক তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন।

XS
SM
MD
LG