ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং পররাষ্ট্র নীতির প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করেছেন দেশটির মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় আইওয়া রাজ্যের রিপাবলিকান গভর্নর কিম রেনল্ডস।
ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন ভাষণ সম্পর্কে রিপাবলিকানদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায়, বাইডেন প্রশাসনের বিদেশি নীতির ব্যর্থতার একটি তালিকা উপস্থাপন করেন গভর্নর রেনল্ডস। এর মধ্যে গত বছরের আফগানিস্তান থেকে বিশৃঙ্খলভাবে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটিও ছিল। তার মতে, এটি শুধুমাত্র “আমেরিকানদের জীবন নষ্ট” করাই নয়, বরং এই সিদ্ধান্ত “আমাদের মিত্রদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল এবং এতে আমাদের শত্রুরাও সাহস পেয়েছে।”
রেনল্ডস বিশ্বাস করেন, বাইডেন অভ্যন্তরীণ তেল উৎপাদন বাদ দিয়ে রুশ পাইপলাইনের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে রাশিয়ার জন্য ইউক্রেন আক্রমণের পথ প্রশস্ত করেছেন। তিনি বলেন, বাইডেন এবং কংগ্রেশনাল ডেমোক্রেটরা “সামরিক প্রস্তুতির পরিবর্তে রাজনৈতিক যথার্থতার দিকে মনোনিবেশ করতে” বেশি ব্যস্ত ছিলেন।
“বিশ্ব মঞ্চে দুর্বলতা দেখালে তার মূল্য দিতে হয়”, রেনল্ডস বলেন। “এবং পররাষ্ট্র নীতির প্রতি প্রেসিডেন্টের দৃষ্টিভঙ্গি ধারাবাহিকভাবে খুব কম ও বিলম্বিত।”
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে, প্রথম মেয়াদের এই গভর্নর বলেন, বাইডেন এবং কংগ্রেশনাল ডেমোক্রেটরা গত বছর ব্যয় করেছে “আমেরিকানদের সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করে বা সেগুলোকে আরও খারাপ করে”, যেমন মূল্যস্ফীতি। রেনল্ডস বলেন, বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছিল যে, “ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং বলা হয়েছিল প্রাকৃতিক জ্বালানিবান্ধব নীতি গ্রহণ না করলে গ্যাসের দামও বৃদ্ধি পাবে।”
তিনি কোভিড মহামারি মোকাবিলায় তার এবং অন্য রিপাবলিকান গভর্নরদের নেওয়া কার্যপদ্ধতি নিয়ে গর্ব করেন। এর মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাস বিধিনিষেধগুলোর বিরোধিতা; যেমন ভ্যাকসিন নেওয়া এবং বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, বিশেষত পাবলিক স্কুলগুলোতে।
রেনল্ডস বলেন, “আমেরিকানরা রাজনৈতিক শ্রেণি কর্তৃক রূপান্তরিত একটি দেশের শাসন ব্যবস্থা নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে একটি অভিজাত শ্রেণি তাদেরকে বলে দেবে, তারা কী বলবে এবং কী বলতে পারবে না, তারা কী করবে এবং কী বিশ্বাস করবে না”। “প্রত্যেককে তার জাতি অনুসারে শ্রেণিবদ্ধ করে তারপর বর্ণবাদ মুছে ফেলার যে ভণিতা লোকেরা করে তা দেখে দেখে আমেরিকানরা ক্লান্ত”।
৬২ বছর বয়সী রেনল্ডস একটি গ্রামীণ কাউন্টির নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ হিসেবে তার রাজনৈতিক কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। ২০০৮ সালে আইওয়া রাজ্যের সেনেটে নির্বাচিত হওয়ার আগে এই অফিসে চার মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দুই বছর পরে তিনি লেফটেন্যান্ট গভর্নর পদে উন্নীত হন। গভর্নর টেরি ব্রানস্ট্যাডের সঙ্গে লড়ে ২০১৭ সালে তার স্থলাভিষিক্ত হন। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তাকে চীনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নির্বাচনও করেছিলেন।