ইরাকের রাজধানীর একটি মহল্লায় “আমরা রাশিয়াকে সমর্থন করি” লেখা ভ্লাদিমির পুতিনের একটি বিশাল পোস্টার কয়েক ঘন্টার জন্য দেখা যায়। তারপর নিরাপত্তা বাহিনী এসে দ্রুত সেটি নামিয়ে ফেলে। তারপরেই আসে একটি নিরাপত্তা নির্দেশ: পুতিনের ছবির সকল প্রকাশ্য প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা হবে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণটির বিরুদ্ধে লেবানন সরকারের নিন্দার প্রতিবাদে, শক্তিশালী হেজবোল্লাহ মিলিশিয়া মিছিল করে নিরপেক্ষতার আহ্বান করে।
এ ধরণের দ্বন্দ্ব ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যের গভীর বিভাজনটি প্রকাশ করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়া নিজেদের একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সেখানে তারা রাষ্ট্রীয় এবং রাষ্ট্র বহির্ভূত পক্ষগুলোর মাঝে শক্তিশালী বন্ধু খুঁজে নিয়েছে, যখন কিনা অন্যদিকে আমেরিকার প্রভাব হ্রাস পেয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা, রাশিয়া অথবা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে শত্রুভাবাপন্ন না করে তোলার ব্যাপারে বেশ সতর্ক। তবে ইরাকের শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী থেকে শুরু করে লেবাননের হেজবুল্লাহ গোষ্ঠী এবং ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী পর্যন্ত অন্যান্য শক্তিগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে সোচ্চার সমর্থন করে।
অপরদিকে সরকারগুলো একটি নাজুক অবস্থানে রয়েছে।
বাগদাদের পলিটিক্যাল থট থিঙ্ক ট্যাঙ্কের প্রধান এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইহসান আলশামারি বলেন, “ইরাক এই যুদ্ধটির বিপক্ষে তবে তারা সেটির নিন্দা জানায়নি এবং কোন পক্ষও নেয়নি”। তিনি বলেন যে, ইরাকের নিরপেক্ষ থাকতে হবে কারণ তাদের রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশ, উভয়ের সাথেই সংশ্লিষ্ট স্বার্থ রয়েছে।
তিনি বলেন যে, অঞ্চলটিতে ইরানের মিত্ররা অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই রাশিয়ার পক্ষে “কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী এবং পশ্চিমা বিরোধী এবং বিশ্বাস করে যে রাশিয়া তাদের মিত্র”।
ইরাকের অনেকেই রাশিয়ার ইউক্রেনে আক্রমণটির সাথে সাদ্দাম হোসেনের প্রতিবেশী দেশ কুয়েতে আক্রমণটির এবং তৎপরবর্তী ইরাকের উপর আরোপিত অনেক বছরব্যাপী অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সাদৃশ্য খুঁজে পান। মাত্র কিছুদিন আগে ইরাক কুয়েতকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া শেষ করেছে, যার মোট পরিমাণ ৫,২০০ কোটি ডলারেরও বেশি।