অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সহিংসতা বাড়ার সাথে সাথে সিরিয়া অর্থনৈতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন: জাতিসংঘ প্যানেল


৫৫ বছর বয়সী মাহমুদ মাদারাতিকে তাঁর ছেলের সাথে দেখা যাচ্ছে , সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকা উত্তর সিরিয়ায় গোলাগুলির সময়, তার ছেলে হাতে এবং পায়ে আঘাত পায় এবং তাঁর পা কেটে ফেলতে হয়েছিল। ৩ মার্চ, ২০২২, ছবি-রয়টার্স
৫৫ বছর বয়সী মাহমুদ মাদারাতিকে তাঁর ছেলের সাথে দেখা যাচ্ছে , সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকা উত্তর সিরিয়ায় গোলাগুলির সময়, তার ছেলে হাতে এবং পায়ে আঘাত পায় এবং তাঁর পা কেটে ফেলতে হয়েছিল। ৩ মার্চ, ২০২২, ছবি-রয়টার্স

জাতিসংঘের তদন্তকারীদের একটি প্যানেল রিপোর্ট করেছে যে সিরিয়া একটি অর্থনৈতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে যা ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব এবং তা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটার আশংকা রয়েছে।

১০ বছরেরও বেশি আগে সিরিয়ায় সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘের সিরিয়া কমিশন অফ ইনকোয়ারি সিরিয়ায় মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তিন-সদস্যের কমিশন তাদের সর্বসাম্প্রতিক প্রতিবেদনে, পরিস্থিতি বর্ণনা করেছে যে সিরিয়া কষ্টের নতুন স্তরে পৌঁছেছে। এতে বলা হয়েছে, জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ দারিদ্র্যের মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে এবং মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল।

কমিশনের সদস্য হ্যানি মেগালি বলেছেন, বিশ্বের মনে হচ্ছে সিরিয়ার সংঘাত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিপরীতে, তিনি বলেছেন যে যুদ্ধ আসলে ক্রমবর্ধমান।

মেগালি বলেছেন, “উত্তর-পশ্চিমে, আমরা সিরিয়ার রাষ্ট্র এবং রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে বর্ধিত গোলাবর্ষণ, আকাশে এবং স্থল থেকে গোলাবর্ষণ দেখতে পাচ্ছি, নির্বিচারে অস্ত্রের ব্যবহার এবং লক্ষ্য স্থির করে রকেট নিক্ষেপও দেখছি । আমরা দেখছি এই অঞ্চলে ক্রাসনোপল রকেটও" ।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে এই অত্যাধুনিক সোভিয়েত-শৈলীর আর্টিলারি অস্ত্র ব্যবস্থা দ্বারা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু ও হত্যা করা হচ্ছে। এতে বলা হয়েছে, সারা দেশে বেসামরিক নাগরিকরা হত্যা, বেআইনি আটক ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

মেগালি বলেছেন যে কমিশন ইউক্রেনে একই রকম পরিস্থিতির সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

কমিশনের চেয়ারম্যান পাওলো পিনহেইরো বলেছেন যে তিনি এবং তার সহকর্মীরাও সিরিয়ায় ইউক্রেন সংকটের নেতিবাচক পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।

পিনহেইরো বলেছেন, "মূদ্রাস্ফীতি ইতোমধ্যেই আকাশচুম্বী, এবং সরকার জ্বালানি সহ প্রয়োজনীয় পণ্যের রেশনিং শুরু করেছে," ৷ "আমদানি মূল্য বেড়েছে, এবং আমাদের মনে রাখা উচিত যে সিরিয়ার বেশিরভাগ গম আমদানি হয় ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে।"

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ১০ বছরের বিধ্বংসী যুদ্ধ কয়েক লক্ষ মানুষের জীবন নিয়েছে এবং যুদ্ধ-পূর্ব জনসংখ্যার অর্ধেককে বাস্তুচ্যুত করেছে। এতে বলা হয়েছে ১,০০,০০০ এরও বেশি মানুষ নিখোঁজ বা জোরপূর্বক গুম হয়েছে।

কমিশনাররা বলছেন যে সিরিয়ার জনগণ তাদের দেশকে ধ্বংস হতে দেখেছে এবং এর থেকে বেশি আর কিছু তারা নিতে পারবে না। যদিও এখন সবার চোখ ইউক্রেনের ট্র্যাজেডির দিকে, তবে সিরিয়ানদের দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত, তাদের দুর্দশা উপেক্ষা করা উচিত নয়।

XS
SM
MD
LG