অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সহযোগিতা সম্প্রসারণে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সালের


বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের বৈঠক। (ছবি- ইউএনবি)
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের বৈঠক। (ছবি- ইউএনবি)

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বুধবার (১৬ মার্চ) বলেছেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী এবং দুই দেশ তাদের সহযোগিতা সম্প্রসারণে এক সঙ্গে কাজ করবে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি মনে করি অনেক কিছু করার আছে, কেননা এই লক্ষ্যে দুই দেশের একত্রে কাজ করার সুস্পষ্ট লক্ষ্য রয়েছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বলেন, “তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তেল সরবরাহ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।”

প্রিন্স ফয়সাল বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সৌদি আরব খুবই গর্বিত এবং এই সম্পর্কের ভবিষ্যত সম্পর্কে আমরা খুব আশাবাদী।… আমাদের একটি চমৎকার রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে।”

দুই দেশের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা এই মজবুত ভিত্তির ওপর আরও বিস্তৃত অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এখানে সৌদি কোম্পানিগুলোর উল্লেখযোগ্য আগ্রহ দেখতে পাচ্ছি এবং আমরা সেই সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, “প্রথমবারের মতো এই উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সংলাপে তারা খুবই গর্বিত।… প্রায় ২০টি সৌদি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।”

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য নিরাপত্তার ওপর অনেক জোর দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা খাদ্য নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “সৌদি পক্ষ শতভাগ হজ আবেদনকারীদের জন্য হয়রানিমুক্ত ভিসা ছাড়পত্রের আশ্বাস দিয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

এর আগে সকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ। সাক্ষাৎ শেষে তিনি বলেছেন, অনেক সৌদি কোম্পানি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, তার সরকার দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিদ্যমান সুযোগগুলো কাজে লাগাবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনা সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং প্রতিরক্ষাসহ বহু ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্প্রসারিত ও সুসংহত হয়েছে।… সৌদি আরব বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থানে রয়েছে।”

তিনি সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ এবং সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদকে তার শুভেচ্ছা জানান।

শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহর দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে “বন্ধুত্বের শক্ত বন্ধন” হিসেবে উল্লেখ করে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আগামী দিনে এটা আরও জোরদার হবে।”

তিনি বলেন, “আমাদের অগ্রাধিকার খাত হচ্ছে নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে আরও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো।”

বাংলাদেশ ও সৌদি আরব বিভিন্ন বৈশ্বিক ক্ষেত্রেও এক সঙ্গে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রিন্স ফয়সাল।

তিনি বলেন, “অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক বিশ্ব অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।”

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসেফ ইসা আল দুলাইহান উপস্থিত ছিলেন।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় আসেন । বুধবারই তিনি ঢাকা ছাড়েন।

XS
SM
MD
LG