ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসার পর কিছুটা স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়ার আশায়, পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারস’-তে শনিবার হাজার হাজার শরণার্থী লম্বা লাইনে অপেক্ষা করছিলেন। সেখানে তাদেরকে পরিচয়পত্র দেয়া হচ্ছিল যেগুলো অন্তত কিছুদিনের জন্য হলেও তাদেরকে নিজেদের জীবন চালাতে সাহায্য করবে।
এই ‘পেসেল’ (পিইএসইএল) কার্ডটি পাওয়ার জন্য ওয়ারস-র জাতীয় স্টেডিয়ামে রাত থেকেই শরণার্থীরা লাইনে দাঁড়াতে আরম্ভ করেন। পরিচয়পত্রটি আগামী ১৮ মাসের জন্য তাদেরকে কাজ করতে, সেখানে বাস করতে, স্কুলে পড়াশোনা করতে, স্বাস্থ্যসেবা পেতে ও সামাজিক সুবিধাদি পেতে অনুমতি প্রদান করবে। তবু, দুপুরের মধ্যে অনেককেই অন্য আরেকদিন ফেরত আসতে বলা হয়। পোল্যান্ড কর্তৃপক্ষ প্রক্রিয়াটিকে সহজ করলেও কার্ডটির চাহিদা অত্যন্ত বেশি ছিল।
৩০ বছর বয়সী ক্যাটেরিনা লোহভিন বলেন, “আমরা এখন একটা চাকরি খুঁজছি”। তিনি তার মায়ের সাথে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন যে, রাশিয়ার আক্রমণের মানসিক ধাক্কাটি সামাল দিতে তাদের কিছুটা সময় লেগেছে।
“আমরা এখনও জানি না (যে আমরা কি করব)” বলে তিনি আরও বলেন, “তবে পোল্যান্ডের মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তারা আমাদেরকে চমৎকারভাবে স্বাগত জানিয়েছেন।”
পোল্যান্ড ইতোমধ্যেই ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা ২০ লক্ষেরও বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। অর্থাৎ, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর পর থেকে, জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী পালিয়ে যাওয়া ৩৩ লক্ষ শরণার্থীর বড় অংশই পোল্যান্ডে গিয়েছেন।
পোল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, বুধবার কার্যক্রমটি আরম্ভ হওয়ার পর থেকে, ওয়ারস’-তে প্রতিদিন ১,০০০-এর বেশি মানুষ সহ এখন পর্যন্ত ১,২৩,০০০ এর বেশি শরণার্থীকে পরিচয়পত্র নম্বর প্রদান করা হয়েছে।
শরণার্থীরা মাথাপিছু এককালীন ৩০০ ঝ্লটিস (৭০ ডলার) এর একটি ভাতা পাবেন এবং ১৮ বছরের কম বয়সী প্রতিটি শিশু মাসিক ৫০০ ঝ্লটিস (১১৭ ডলার) করে ভাতা পাবে। শরণার্থীদের মধ্যে যারা চাকরি পাবেন তাদেরকে পোল্যান্ডের অন্যান্য কর্মীদের মতই কর দিতে হবে।