ওয়াশিংটন — ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি বলেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। পাশাপাশি তিনি সতর্ক করেছেন, একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে, শেষ পর্যন্ত "এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে" মোড় নিতে পারে।
তিনি রবিবার প্রচারিত একটি সাক্ষাত্কারে সিএনএন-এর "ফরিদ জাকারিয়া" কে বলেছেন, "আমি মনে করি আলোচনা ছাড়া, আমরা এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারব না"।
জেলেনস্কি সিএনএনকে বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনে প্রবেশ করেছে "আমাদের নির্মূল করতে, আমাদের হত্যা করার জন্য", কিন্তু তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ইউক্রেন কিছুতেই তার দেশের সার্বভৌমত্ব বা অখণ্ডতা বিনষ্ট হতে দেবে না।
অবরুদ্ধ শহর মারিউপোলের একটি আর্ট স্কুল যেখানে প্রায় ৪০০ জন লোক আশ্রয় নিয়েছিল, রাশিয়ান বাহিনী বোমা মেরে স্কুলটি ধ্বংস করে দেয়। ওই থিয়েটারের ঠিক বাইরে মাটিতে আকাশ থেকে দৃশ্যমান বড় অক্ষরে রাশিয়ান ভাষায় "শিশু" শব্দটি লেখা হয়েছিল, যাতে রাশিয়ান বাহিনী ভিতরে কারা ছিল তা জানতে পারে। তারপরও তারা হামলা চালায়।
মারিউপোলের সিটি কাউন্সিল রোববার জানিয়েছে, হামলায় ভবনটি ধ্বংস হয়ে গেছে। জীবিতদের সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন সিবিএস-এর "ফেস দ্য নেশন"-কে বলেছেন, তিনি মনে করেন রাশিয়ান বাহিনী এই নৃশংস বেসামরিক হামলার আশ্রয় নিচ্ছে, কারণ তাদের সামরিক "অভিযান স্থবির" হয়ে পড়েছে।
অস্টিন এটিকে "একটি ঘৃণ্য হামলা," বলে অভিহিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা অনুমান করেছেন, আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনীয়রা ৩,০০০ এরও বেশি রুশ সেনাকে হত্যা করেছে।
ইউক্রেন সরকারের মতে, তাদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন সিনিয়র রুশ কর্মকর্তা ছিলেন।
আক্রমণ চতুর্থ সপ্তাহে গড়ালেও, ক্রেমলিনের প্রধান টার্গেট ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয়েছে, রাশিয়ার সৈন্যরা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) রিপোর্ট করেছে, শনিবার পর্যন্ত কমপক্ষে ৯০২ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে এবং ১,৪৫৯ জনের বেশি আহত হয়েছে, তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে আরও বেশি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা। ওএইচসিএইচআর জানিয়েছে, বেশিরভাগ মৃত্যু ভারী কামান এবং একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান হামলার কারণে সৃষ্ট বিস্ফোরণে হয়েছে। ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১১২ জন শিশু রয়েছে।
রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডে রবিবার টুইট করে বলেছেন, "ইউক্রেনের যুদ্ধ এতটাই ধ্বংসাত্মক যে প্রায় ১ কোটি লোক ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে – তারা হয় দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, নয়তো বিদেশে শরণার্থী হিসাবে আশ্রয় নিয়েছে।"