অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর বাল্টিক দেশগুলো স্থায়ী নেটো প্রতিরক্ষার জন্য চাপ দিচ্ছে


ফরাসি সেনাবাহিনী কর্তৃক ১৮ মার্চ ২০২২, শুক্রবার সরবরাহকৃত এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সপ্তম মাউন্টেন ব্যাটালিয়নের একজন ফরাসি সেনা ১৭ মার্চ ২০২২, বৃহস্পতিবার এস্তোনিয়ার আমারি বিমান ঘাঁটিতে নেটো ব্যাজ পরছেন৷ (ছবি- এপি)
ফরাসি সেনাবাহিনী কর্তৃক ১৮ মার্চ ২০২২, শুক্রবার সরবরাহকৃত এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সপ্তম মাউন্টেন ব্যাটালিয়নের একজন ফরাসি সেনা ১৭ মার্চ ২০২২, বৃহস্পতিবার এস্তোনিয়ার আমারি বিমান ঘাঁটিতে নেটো ব্যাজ পরছেন৷ (ছবি- এপি)

ছোট বাল্টিক দেশগুলো, যাদের সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী রাশিয়ার কারণে দমে আছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পরে তাদের ভূখণ্ডে বৃহত্তর এবং আরও স্থায়ী প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠার জন্য নেটোর ওপর চাপ দিচ্ছে।

এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া দীর্ঘকাল ধরে নেটোর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিগণিত। এই তিন দেশে মাত্র ছয় মিলিয়ন লোকের বসবাস। দেশগুলো ২০০৪ সালে পশ্চিমা সামরিক জোটে যোগ দেয়। দেশ তিনটি ইওরোপীয় নেটোর বাকি দেশগুলোর সঙ্গে শুধুমাত্র একটি সরু করিডোর দিয়ে সংযুক্ত। এই করিডোরটি চারদিক দিয়ে রাশিয়ার সশস্ত্র ছিটমহল এলাকা (এক্সক্লেভ) কালিনিনগ্রাদ এবং রাশিয়ার মিত্র বেলারুশের মধ্যে অবস্থিত।

মস্কো যেহেতু পূর্ব ইওরোপজুড়ে তার প্রভাব পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে, সেহেতু সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। যাহোক, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলো নেটো জোটকে শক্তিশালী করায় তারাও উত্সাহিত হয়েছে।

২০১৪ সাল পর্যন্ত জোটের পূর্ব অংশে নেটোর কোনো বাহিনী ছিল না। এ সময় এটি রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাল্টিক এবং পোল্যান্ডে চারটি বহুজাতিক যুদ্ধবাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ বছর রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর নেটোর উপস্থিতি আরও জোরদার হয়। পুরো বাল্টিক অঞ্চলে এখন প্রায় ৭ হাজার ৭০০ বিদেশি নেটো সেনা রয়েছে—যা এই বছরের শুরুর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

কিন্তু এই শক্তিবৃদ্ধি সত্ত্বেও, বাল্টিক অঞ্চলে নেটো বাহিনী সম্ভবত একটি বড় মাপের রুশ আক্রমণকে পরাস্ত করতে পারবে না বলে বাল্টিক নেতারা সতর্ক করেছেন।

বাল্টিক নেতারা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের একটি স্থায়ী ঘাঁটির জন্য চাপ দিয়ে আসছেন। এটিকে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিরোধ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের সেনা নেটোর বাল্টিক এলাকায় চক্রাকার যুদ্ধবাহিনীর অংশ, যার নেতৃত্বে রয়েছে জার্মানি, ব্রিটেন ও কানাডা।

অনেক বাল্টিক নেতা আশা করছেন যে, এই সপ্তাহে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নেটো এবং অন্য ইওরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য বেলজিয়ামের ব্রাসেলস সফর করবেন তখন একটি স্থায়ী নেটো উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।

অস্ত্র মোতায়েনের দিক থেকে বাল্টিক অঞ্চলে নেটোর স্থায়ী উপস্থিতি বৃদ্ধির পরিসর কী হবে, তা স্পষ্ট নয়। স্নায়ুযুদ্ধের সময়, যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির মতো দেশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের মাধ্যমে ইওরোপীয় নিরাপত্তার ভয় কমিয়েছে, লন্ডনের এসওএএস বিশ্ববিদ্যালয়ের কূটনীতির অধ্যাপক ড্যান প্লেশ বলেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য যেকোনো নেটো সম্প্রসারণ সংবেদনশীল। তিনি ইউক্রেনে তার আগ্রাসনের ন্যায্যতা হিসেবে অন্য আরও কারণের মধ্যে এই বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন। পুতিন এখনো বাল্টিক দেশের নেটোতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষুদ্ধ। তিনি একে পশ্চিমা দেশগুলোর বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখেন।

শিগগিরই বাল্টিক অঞ্চলে নেটো স্থায়ী উপস্থিতি প্রতিষ্ঠা করবে কি না তা ভবিষ্যদ্বাণী করার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা মিশ্র মত ব্যক্ত করেছেন। প্লেশের মতে, ইউক্রেনের পরিস্থিতি কীভাবে অগ্রসর হয়, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।

XS
SM
MD
LG