অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কিয়েভ ও মস্কো বলছে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে—যদিও সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে


এই ছবিতে (২৩ মার্চ অবমুক্ত করা) দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেনের মাইকোলাইভে গোলাগুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর পাশে উদ্ধারকারীরা কাজ করছেন। (ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবার প্রেস সার্ভিস/রয়টার্স থেকে সরবরাহকৃত)
এই ছবিতে (২৩ মার্চ অবমুক্ত করা) দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেনের মাইকোলাইভে গোলাগুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর পাশে উদ্ধারকারীরা কাজ করছেন। (ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবার প্রেস সার্ভিস/রয়টার্স থেকে সরবরাহকৃত)

ওয়ারশ—ইউক্রেন ও রাশিয়া, দুই দেশের নেতারাই বলেছেন যে, শান্তি আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তবে পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, এখনই কোনো চুক্তি করলে বিপদ হতে পারে। কিছু পশ্চিমা কর্মকর্তা ও স্বাধীন পর্যবেক্ষকেরা এখনো সন্দিহান এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, মস্কো সরল বিশ্বাসে আলোচনা করছে না। তাদের মতে রাশিয়া ইউক্রেনকে আক্রমণাত্মক ও ভূমি থেকে আকাশ প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা এবং অন্য আরও অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করা বা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো তীব্রতর করা থেকে নেটোকে বাধা দিতে আলোচনাকে ব্যবহার করছে।

অন্যরা সন্দিহান যে, কিয়েভ ও মস্কো কিছু কিছু ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলেও একটি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সফলভাবে সাজানো প্রায় অসম্ভব হবে। তারা উদহারণ হিসেবে ২০১৫ সালে ওব্লাস্টে যুদ্ধ শেষ করার উদ্দেশ্যে করা মিনস্ক চুক্তির কথা বলেছেন। যার মাধ্যমে ক্রেমলিনের সহায়তায় মস্কোপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলকৃত দনবাসে যুদ্ধবিরতি হওয়ার কথা ছিল।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি এই সপ্তাহে আবারও পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, তিনি রাশিয়ান বাহিনী প্রত্যাহার এবং ইউক্রেনের সুরক্ষার নিশ্চয়তার বিনিময়ে নেটোতে যোগদানের জন্য ইউক্রেনের আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাহার করতে প্রস্তুত।

জেলেন্সকি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি ক্রিমিয়া ও দনবাসের দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রজাতন্ত্র যা মস্কো স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সে সম্পর্কেও ভবিষ্যতে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। উল্লেখ্য, রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করে। তবে জেলেন্সকি চান যে, যুদ্ধবিরতি ও রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের পরে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হোক এবং তিনি আরও শর্ত জুড়ে দিয়ে বলেন যে, ক্রিমিয়া ও দনবাস সম্পর্কিত যেকোনো প্রস্তাব একটি গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও বুধবার (২৩ মার্চ) একটি আশাব্যঞ্জক মন্তব্য করেছেন। “বিভিন্ন পক্ষের থেকে জানা গেছে, বেশ কয়েকটি মূল বিষয়ে কূটনৈতিক অগ্রগতির বিষয়টি নজরে আসছে”, এবং সহিংসতা বন্ধে এই অর্জনগুলো যথেষ্ট, তিনি বলেন। তবে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেননি তিনি।

রাশিয়া কিয়েভকে নেটোতে যোগদানের যেকোনো পরিকল্পনা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে। তবে এটি পশ্চিমের দিকে ইউক্রেনের ঝোঁক প্রতিহত করতেও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে পশ্চিমা কূটনীতিকদের ধারণা ইউক্রেনের ইওরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের ইচ্ছা রাশিয়াকে ক্ষুদ্ধ করেছে এবং রাশিয়া ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় পশ্চিমাদের সম্পৃক্ততাও নস্যাৎ করতে চায়।

মস্কো আরও দাবি করছে যে, এটি ইউক্রেনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখবে—২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু পর ক্রেমলিন নিয়ন্ত্রিত বিচ্ছিন্ন প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এবং তাদের চারপাশের সমস্ত অঞ্চল। যদিও কিয়েভ ইঙ্গিত দিয়েছে যে, এটি দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের অবস্থার ওপর আপস করতে পারে, তবে এটি রাশিয়ার অন্য অঞ্চলের দাবিগুলোকে প্রত্যাখ্যান করছে।

মনোযোগ সরানোর কৌশল?

ব্রিটেনের পররাষ্ট্রসচিব লিজ ট্রাস আলোচনার সবচেয়ে স্পষ্ট সমালোচক ছিলেন। তিনি উদ্বিগ্ন যে, রাশিয়া এই আলোচনাকে ধুম্রজাল হিসেবে ব্যবহার করে একটি নতুন আক্রমণাত্মক এবং এমনকি আরও চরম সামরিক পদক্ষেপের আগে পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে। “আমি খুব সন্দিহান”, ট্রাস টাইমস অব লন্ডন পত্রিকাকে বলেছেন।

অন্য সংশয়বাদীরা সিরিয়া বিষয়ে রাশিয়া পশ্চিমা সহযোগী দেশগুলোকে বিভক্ত করতে এবং রাশিয়ার মিত্র বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য লড়াইরত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিভক্তি বাড়াতে যেভাবে আলোচনাকে দীর্ঘায়িত এবং ব্যবহার করেছিল তার দিকে ইঙ্গিত করেন।

XS
SM
MD
LG