অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ঢাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ, আইসিডিডিআর,বি'তে ঘণ্টায় ৫০ রোগী 


ঢাকার একটি হাসপাতালে ডাইরিয়ার রোগীর চিকিৎসা করছেন চিকিৎসক। (ফাইল ফটো- এপি)

তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ঢাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। পানিবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটছেন রোগীরা। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র-আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় কর্মীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ওই হাসপাতালটিতেই ডায়রিয়ার বিশেষায়িত চিকিৎসা দেয়া হয়। গত কয়েকদিন ধরে দিনে এক হাজারের বেশি রোগী এই হাসপাতালে আসছে। প্রতি ঘণ্টায় রোগী আসছে ৫০ জনের মতো। বেশির ভাগ রোগীকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে কিছু রোগীকে ছেড়ে দেয়া হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা এক হিসাবে দেখা যায় গত প্রায় ৯ দিন ধরে আইসিডিডিআর,বি'তে এক হাজারের বেশি রোগী এসেছে। প্রতিদিনই রোগী বাড়ছে। সর্বশেষ ২৩শে মার্চ রোগী আসে ১ হাজার ২৭২ জন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২১৬ জন। রোগী বাড়ায় আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের বাইরে বসানো হয়েছে অস্থায়ী তাঁবু।

আইসিডিডিআর,বি'র মিডিয়া ম্যানেজার একেএম তারিফুল ইসলাম খান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “গরমের কারণে ডায়রিয়ার রোগী বেড়েছে। রোগীদের মধ্যে বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি। ২০০৭ ও ২০১৮ সালের পর এবার ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি মনে হচ্ছে”। তিনি বলেন, “সাধারণত মার্চের শেষ দিকেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি দেখা যায়। ঢাকার সব জায়গা থেকে রোগী আসছে। তবে যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, উত্তরখান, শনির আখড়া এসব এলাকা থেকে বেশি রোগী আসছে”।

হঠাৎ কেন ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে ভয়েস অফ আমেরিকার পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ’র কাছে। তিনি বলেন, “হঠাৎ গরম বেড়ে যাওয়াসহ কিছু কারণে ডায়রিয়া বেড়ে থাকতে পারে। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তন। গরমের কারণে মানুষ বাইরে তরল খাবার খাচ্ছে। এতে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরও অনেকে রাস্তার পাশের দোকান থেকে খাবার কিনে খাচ্ছে। এসব খাবার অনেকক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত নয়”। তিনি বলেন, “গরমের কারণে বাসায় রান্না করা খাবারও একটা সময় পর নষ্ট হয়ে যায়। এসব কারণে রোগী বাড়তে পারে। যেহেতু পানিবাহিত রোগ, তাই সবাইকে পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক”।

আইসিডিডিআর,বি সূত্র জানায়, মার্চের শুরু থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ থাকলেও মধ্য মার্চ থেকে রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়ছে। গত ১৬ই মার্চ ১ হাজার ৫৭ জন রোগী চিকিৎসা নিতে যান আইসিডিডিআর,বি'তে। ২০শে মার্চ এ সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২১৬ জন। ১৬ থেকে ২৪শে মার্চ দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ডায়রিয়া রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আইসিডিডিআর,বি’র সহযোগী গবেষক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. লুবাবা শাহরিন বলেন, “খাবার ও পানির মাধ্যমে ডায়রিয়ার জীবাণু সংক্রমিত হয়। গরম বাড়ার কারণে খোলা জায়গার বিভিন্ন ফলের রস , শরবত খাচ্ছেন পথচারীরা। এই কারণে ডায়ারিয়ার বিস্তারটা এবার ব্যাপ “। তিনি আরও বলেন, “মার্চের শুরু থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ১৪ই মার্চ থেকে দৈনিক এক হাজারের বেশি রোগী আসছে”। তিনি জানান, ঢাকার বাইরে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা থেকেও প্রচুর রোগী আসছে। তাদেরও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

XS
SM
MD
LG