হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান রবিবারের জাতীয় নির্বাচনে নিজের বিজয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। এই নিয়ে তিনি চতুর্থ দফায় তার ডানপন্থী দলের পক্ষে নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট দাবি করলেন। আংশিক ভোট গণনা শেষে তার দল অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।
নির্বাচনের সন্ধ্যায় রাজধানী বুদাপেস্টে তার ফিদেজ দলের কর্মকর্তা ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ১০ মিনিটব্যাপী একটি ভাষণ প্রদান করেন তিনি। ভাষণ দেবার সময় উপস্থিত সমর্থকরা “ভিক্টর” বলে উল্লাস করছিলেন। ভাষণে তিনি নির্বাচনটিকে তার দলের জন্য এক “বিশাল জয়” হিসেবে ঘোষণা করেন।
ওরবান বলেন, “আমরা এত বিশাল এক জয় পেয়েছি যে সেটা চাঁদ থেকেও দেখা যায়, এবং ব্রাসেলস থেকে তো অবশ্যই দেখা যায়।” গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পশ্চাদপসরণ ও দূর্নীতির অভিযোগের কারণে ওরবান প্রায়শই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিন্দার শিকার হয়।
জাতীয় নির্বাচন দফতরের তথ্যমতে, ৭৫% ভোট গণনা শেষে, ওরবানের ফিদেজ দলের নেতৃত্বাধীন জোটটি ৫৪.৫% ভোট পায়। অপরদিকে, ইউনাইটেড ফর হাঙ্গেরি নামের ইউরোপপন্থী বিরোধীদলীয় জোট প্রায় ৩৪% ভোট পেয়েছে।
আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছে যে, ফিদেজ দলটির পক্ষে আবারও একটি সাংবিধানিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব হবে। এর ফলে, মধ্য-ইউরোপীয় এই দেশটিতে তাদের সুদূরপ্রসারী পরিবর্তনগুলো করা অব্যাহত রাখতে পারবে দলটি।
শুরুর দিকে বিভেদ সৃষ্টিকারী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোর ভিত্তিতে প্রচারণা চালালেও, ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়া আক্রমণ আরম্ভের পর থেকে তিনি নাটকীয়ভাবে তার প্রচারণার সুর বদলে ফেলেন। সেই সময় থেকে তিনি যুদ্ধটিকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার বিপরীতে যুদ্ধ ও বিশৃঙ্খলা, এ দুটোর মধ্যে একটিকে বেছে নেবার নির্বাচন হিসেবে তুলে ধরেন।
একদিকে, বিরোধীদলগুলো হাঙ্গেরিকে তাদের যুদ্ধরত প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনকে সমর্থন করতে এবং ইইউ ও নেটো সহযোগীদের সাথে তাল মিলিয়ে চলার আহ্বান জানায়। অপরদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘকালীন মিত্র ওরবান, জোর দেন হাঙ্গেরির নিরপেক্ষতার উপর এবং মস্কোর সাথে তাদের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার উপর। এর মধ্যে সুবিধাজনক শর্তে রাশিয়া থেকে গ্যাস ও তেল আমদানির বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।