অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রাস্তায় পড়ে আছে ইউক্রেনীয়দের মৃতদেহ, রাশিয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ব্লিংকেন


পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন। ফাইল ছবি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন। ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ইউক্রেনে নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ এনে রবিবার (৩ এপ্রিল) রাশিয়ার তীব্র নিন্দা করেছেন। কিয়েভের বুচা শহরতলি ছেড়ে যাওয়ার সময় এই প্রথম রাশিয়ার সেনাবাহিনী কর্তৃক রাস্তায় ফেলে যাওয়া ইউক্রেনীয়দের মৃতদেহের একঝলক বিশ্ববাসীর সামনে এসেছে।

“এই নৃশংসতা দেখলে মনে হয় কেউ সপাটে আপনার তলপেটে একটা ঘুষি মারল”, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এই কূটনীতিক সিএনএনের “স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন” শোতে বলেছেন। “না তা সহ্য করা যায়, না তা ভুলে যাওয়া যায়”।

ব্লিংকেন বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধ নথিভুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র “ব্যাপক অনুসন্ধান চালাবে”, যদিও ইউক্রেন দাবি করেছে যে, তারা রাজধানীর চারপাশে উত্তর-মধ্য অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে।

রাস্তায় পাওয়া মৃতদেহগুলোর সম্পর্কে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি সিবিএসের “ফেস দ্য নেশন” শোতে বলেছেন, “সত্যিই। এটা গণহত্যা”। তিনি বলেন যে, রুশ বাহিনী ইউক্রেনকে “ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন” করছে।

নেটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ সিএনএনকে বলেছেন, “ইউরোপে নাগরিকদের বিরুদ্ধে এমন নৃশংসতা আমরা কয়েক দশকের মধ্যে আর দেখিনি”। “যুদ্ধ শেষ করা (রাশিয়া) প্রেসিডেন্ট (ভ্লাদিমির) পুতিনের দায়িত্ব”।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস টুইটারে বলেছেন, “ইউক্রেনের বুচায় নিহত বেসামরিক নাগরিকদের ছবি দেখে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে একটি কার্যকর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য”।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সোমবার বলেছেন যে, বেসামরিক হত্যার অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

ইউক্রেনের প্রধান প্রসিকিউটর রবিবার বলেছেন যে, রাশিয়া কর্তৃক সংঘটিত সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তের সময় কর্তৃপক্ষ কিয়েভ ও এর আশেপাশে ৪১০টি মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক রবিবার একটি বিবৃতিতে দাবি করেছে যে, তারা বুচাতে বেসামরিক লোকদের হত্যা করেনি। তারা আরও দাবি করেছে যে, ভিডিও ফুটেজ ও মৃতদের দেখানো ছবি পশ্চিমা দেশগুলোর “আরেকটি নিছক উস্কানি”। রাশিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বাখায় “ইউক্রেনীয় র‍্যাডিক্যালস”দের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার একটি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানায়।

এই মাসে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিত্বের দায়িত্বে থাকা ব্রিটেন বলেছে, সোমবার কোনো বৈঠক হবে না এবং ইতিমধ্যে নির্ধারিত ইউক্রেন বিষয়ে মঙ্গলবারের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

ব্লিংকেন ও স্টলটেনবার্গ, দুজনই কিয়েভের কাছে যুদ্ধ থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের তাৎক্ষণিক প্রভাব সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন। মস্কো ধারণা করেছিল, ২৪ ফেব্রুয়ারি পূর্ব ইউক্রেনে আক্রমণ এবং অসংখ্য লক্ষ্যবস্তুতে বিমানের সাহায্যে বোমা হামলার কয়েক দিনের মধ্যেই দেশটি ধরাশায়ী হবে।

ব্লিংকেন এই সপ্তাহে অন্য নেটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ব্রাসেলস সফর করবেন। ইউক্রেনে ক্রমাগত সহিংসতার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করতে সামরিক জোটের সংকল্পের ওপর আলোকপাত করবেন তিনি।

XS
SM
MD
LG