বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করা, তাদের “মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক”-এর জন্য সহায়ক হবে।
বুধবার (৬ এপ্রিল) ঢাকার জাপান দূতাবাস জানিয়েছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ভাসানচরে তাদের কার্যক্রমে সহায়তা করার জন্য প্রথম দাতা হিসেবে জাপান ইউএনএইচসিআর এবং ডব্লিউএফপিকে ২০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থায়ন করেছে।
তারা আরও জানিয়েছে, মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে কক্সবাজার ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উন্নত জীবনযাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে আরও সহযোগিতা করবে জাপান।
সম্প্রতি রাষ্ট্রদূত নাওকি ভাসানচর পরিদর্শন করেন। যেখানে ২৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছেন।
জাইকা বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইউহো হায়াকাওয়াও দুই দিনের এই মিশনে যোগ দেন।
এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল জাপানের অর্থায়নের অধীনে চলমান কার্যক্রমের পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে জাইকার সম্ভাব্য দ্বিপক্ষীয় সহায়তা অন্বেষণ করা।
জাপান প্রতিনিধিদলের ভাসানচরে সফরের দিন দ্বীপে স্থানান্তরিত দুই হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাসহ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এলসিইউতে ভাসানচরে যান।
দলটি হাসপাতাল, খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র, জীবিকা প্রকল্প, বাঁধ, শিক্ষা কেন্দ্র এবং নারী ও শিশুদের জন্য কমিউনিটি সেন্টার পরিদর্শন করে। এ সময় অতিরিক্ত আরআরআরসি শামসুদ দৌজা নয়ন এবং আশ্রয়ন-৩ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক রাশেদ সাত্তারের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রদূত নাওকি আর্থিক ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও শরণার্থীদের সেবা প্রদানের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা, এনজিও, নৌবাহিনী এবং বাংলাদেশ সরকারের কাজের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত নাওকি বলেন, ইউএনএইচসিআর, ডব্লিউএফপি এবং ব্র্যাক, ফ্রেন্ডশিপ, জিকে, ইসলামিক রিলিফ, বিডিআরসিএস, কাতার চ্যারিটি ও কোডেকের মতো এনজিওর মানবিক প্রতিক্রিয়া ও প্রচেষ্টা সত্যিই চোখে পড়ার মতো ছিল।
চট্টগ্রাম থেকে শরণার্থীদের সঙ্গে ভাসানচরে যাওয়ার সময় এবং দ্বীপে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার সময় রাষ্ট্রদূত স্বীকার করেন যে, আরও উন্নত জীবন ও জীবিকার সুযোগ এবং উন্নত নিরাপত্তার লক্ষ্যেই কক্সবাজার থেকে তারা ভাসানচরে স্থানান্তরিত হয়েছে।
তিনি বলেন, “তবুও জাপানের ২০ লাখ মার্কিন ডলার তহবিল এবং অন্য দাতাদের সমর্থন সত্ত্বেও আরও মানবিক ফলাফলের জন্য সেবা ও অতিরিক্ত অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ফাঁক রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন যে, দ্বীপের শরণার্থী জনসংখ্যাকে আরও সহায়তা প্রদানের জন্য সহায়তা কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য জাপান জাতিসংঘ ও এনজিওগুলোকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় নিয়েছে।