যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা সতর্ক করছেন যে, ইউক্রেনে যুদ্ধ সম্ভবত কয়েক বছর ধরে চলতে পারে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, বিশ্ব “আরও অস্থির হয়ে উঠছে এবং পরাক্রমশালী শক্তিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক সংঘাতের সম্ভাবনা কমছে না, বরং বাড়ছে”।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) হাউস আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সামনে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে “তার ৪২ বছরের পেশাগত জীবনে ইউরোপ, সম্ভবত সমগ্র বিশ্বের, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
“যুক্তরাষ্ট্র একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক ভূ-কৌশলগত পরিবর্তনের মুখে রয়েছে। চীন বা রাশিয়ার দ্ব্যর্থহীন ক্ষমতার সঙ্গে তাল রেখে আমাদের একটি সুস্পষ্ট কৌশল অনুসরণ করতে হবে”, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ দুটি সম্ভাব্য সামরিক হুমকির কথা উল্লেখ করে বলেন।
আইন প্রণেতারা মিলিকে জিজ্ঞাসা করেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেনে আক্রমণ করা থেকে বিরত রাখা যেত কি না। জবাবে মিলি বলেন, একমাত্র প্রতিরক্ষা হতে পারত যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীকে ইউক্রেনে পাঠানো। তিনি বলেন, সেটা সম্ভব হত না, কারণ তাতে রাশিয়ার সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষের ঝুঁকি তৈরি হতো।
প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন যোগ করেন যে, রাশিয়ার দাবি, যার মধ্যে ইউক্রেনের নেটোতে যোগদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং এর পূর্ব দিকে নেটোর সেনা ও অস্ত্র মোতায়েন হ্রাস করার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত, যা অগ্রহণযোগ্য ছিল।
তিনি এবং মিলি নিশ্চিত করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী ইউক্রেনের অভ্যন্তরে বা প্রতিবেশী পোল্যান্ডে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে প্রশিক্ষণ না দিলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরসহ ইউক্রেনের বাইরে তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
অস্টিন আইন প্রণেতাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র “দৈনিক ভিত্তিতে” ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইউক্রেনীয়রা রাশিয়ান সেনা ও অস্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে স্টিঙ্গার এবং জ্যাভলিন ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা ব্যবহার করেছে।
ইউক্রেনীয়দের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্র জর্জিয়া ও ফিনল্যান্ডের মতো নেটো সদস্যের বাইরের দেশগুলোকে অতিরিক্ত সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার উপায় খুঁজছে, অস্টিন বলেন।
মিলি আইন প্রণেতাদের বলেছিলেন যে, জোটের পূর্ব দিকের নেটো দেশগুলো, যেমন পোল্যান্ড ও রোমানিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী ঘাঁটি স্থাপন করতে “খুবই ইচ্ছুক”।