বুরকিনা ফাসোর সঙ্গে আইভরিকোস্ট তার সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়ানোর পরে জাতিগত সংখ্যালঘু ফুলানিরা অভিযোগ করেছে যে, তাদেরকে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করেছে যে, কঠোর দমন-পীড়নের কৌশলের কারণে উল্টো ফল হতে পারে এবং বিদ্রোহীদের জন্য নতুন সদস্য নিয়োগের পথ সুগম করতে পারে।
যেহেতু সশস্ত্র দলগুলো বুরকিনা ফাসো সীমান্তের কাছে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করছে, আইভরিকোস্টের সরকার গত দুই বছর ধরে উত্তরে বিপুলসংখ্যক সেনা পাঠাচ্ছে।
বেশ কয়েকটি হামলার কেন্দ্রবিন্দুর নিকটবর্তী কং শহরে সম্প্রতি আগত আইভোরিয়ান সরকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া অনেকের মধ্যে একজন হলেন বুবাকার কুয়েটা। তিনজন ফুলানি পুরুষের মধ্যে কুয়েটা একজন, যিনি বর্ণনা করেছিলেন, কীভাবে সেনাবাহিনীর লোকেরা তাকে ও তার পরিবারকে মারধর করে এবং তাদের জাতিগত পরিচয়ের কারণে ১১ দিন থেকে দুই মাস পর্যন্ত বিনা অপরাধে আটকে রাখে।
সাহেল অঞ্চলজুড়ে, একটি সাধারণ ভুল ধারণা রয়েছে যে, ফুলানি জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়েদা দলগুলোর সঙ্গে জড়িত আক্রমণগুলোর জন্য দায়ী। যে হামলাগুলো প্রতিবেশী বুরকিনা ফাসো ও মালিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে৷
সম্পর্ক ছিল সৌহার্দ্যপূর্ণ
কং-এর ফুলানি জাতিগোষ্ঠীর নেতা আমাদু সিদিবে বলেছেন, দুই বছর আগে নতুন সেনাদের আগমনের আগে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক ছিল।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, বুরকিনা ফাসো ও মালিতে ফুলানি জাতিগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন সন্ত্রাসী দলগুলো কর্তৃক তাদেরকে নিয়োগের একটি প্রধান অনুঘটক। সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্রের প্রতি ফুলানিদের ক্ষোভের সুযোগ নেয় বলে মন্তব্য করেন তারা।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জিহাদি দলগুলো কৃষক ও ফুলানিদের মতো পশুপালক গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনার সুযোগ নিয়ে সহিংস সংঘাত সৃষ্টি করে।
জাতিগত দ্বন্দ্ব
টিমবুকটু ইনস্টিটিউটের একজন বিশ্লেষক লাসিনা দিয়ারা বলেছেন যে, তিনি মনে করেন ধর্মীয় ব্যাখ্যার বাইরে, সন্ত্রাসী দলগুলো সামাজিক দ্বন্দ্ব ও জাতিগত বৈরিতাকে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, ফুলানি জাতিগোষ্ঠী এবং এই অঞ্চলের অন্য সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে।
কৃষক ও পশুপালকদের মধ্যে বিরোধ মীমাংসা করার জন্যে পরিচালিত একটি এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা লাসিনা সেলে বলেন, স্থানীয় মিলিশিয়া বাহিনী ডোজোরা আরও উত্তেজনা বাড়ায়। সেলে বলেছেন যে, ডোজোরা যখন ফুলানি কোনো চোরকে গ্রেপ্তার করে, তখন তাদের সঙ্গে অন্য জাতিগোষ্ঠীর চেয়ে খারাপ আচরণ করে।