ইথিওপিয়ার টিগ্রায় অঞ্চলে জাতিগতভাবে উদ্বুদ্ধ নৃশংসতার প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে শুক্রবার (৮ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, টিগ্রায়ান জাতিসত্তার হাজার হাজার ইথিওপিয়ানকে জীবন-ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে পশ্চিম টিগ্রায়তে নির্বিচারে আটক করা হচ্ছে”।
তিনি বলেন, নেতৃস্থানীয় দুটি মানবাধিকার সংগঠন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে প্রাপ্ত এক যৌথ প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র “গভীরভাবে উদ্বিগ্ন”, যা এই অঞ্চলে সহিংসতাকে জাতিগত নির্মূল বলে মনে করেছিল।
প্রতিবেদনে সরকারি বাহিনী ও মিলিশিয়া দলের সহায়তায় আমহারা অঞ্চলের বাহিনীর অপব্যবহারের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পশ্চিম টিগ্রায়তে শত শত বেসামরিক নাগরিককে হুমকি, যৌন সহিংসতা, সাহায্য প্রত্যাখান ও আইন বহির্ভূত হত্যর মাধ্যমে তাদের বাড়িঘর থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এতে পশ্চিম টিগ্রায়জুড়ে আটক রাখার স্থানে মৃত্যু এবং নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক গণধর্ষণের প্রমাণও পাওয়া গেছে।
গবেষকেরা পশ্চিম টিগ্রায় ৪০০ জনেরও বেশি বাসিন্দার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তাদের ফলাফলগুলো পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
ইথিওপিয়া সরকার প্রতিবেদনটি একতরফা হয়েছে বলে সমালোচনা করে জানিয়েছে, এটি তারা সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করবে।
শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে
টিগ্রায় সংঘাত শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের শেষের দিকে, ইথিওপিয়ার ফেডারেল সরকার, একটি স্থানীয় সামরিক বাহিনী ও টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের মধ্যে। যা পরবর্তীতে একটি গৃহযুদ্ধে বিস্ফোরিত হয় এবং ২ মিলিয়ন মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য করে। এই অঞ্চলে আমহারা ও টিগ্রায় সম্প্রদাদের মধ্যে জাতিগত উত্তেজনা কয়েক দশক ধরে বিস্তৃত।
প্রাইসের মতে, যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম টিগ্রায় নির্বিচারে আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তির এবং আটকদের যেখানে রাখা হয়েছে সেই স্থান আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দেখার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
প্রাইস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হলো, “সংঘাতের যেকোনো পক্ষের মাধ্যমে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে”।
সরকার ও মিলিশিয়া দলগুলোর বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে টিগ্রায় লাখ লাখ মানুষ প্রয়োজনে যাতে মানবিক সহায়তার সুযোগ পায় সে জন্য সাহায্য সংস্থাগুলো লড়াই করেছে।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, জাতিসংঘ ও মানবিক অংশীদারেরা ২ এপ্রিল থেকে সড়কপথে টিগ্রায় আর কোনো সহায়তা পাঠাতে পারেনি। তিনি যোগ করেছেন, এপ্রিলের বহরের আগমন ছিল ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সড়কপথে জাতিসংঘের সরবরাহের টিগ্রায় প্রথমবারের মতো প্রবেশ।
ডুজারিক বলেন, ৫২ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ১২ লাখের কাছে খাদ্য পৌঁছেছে। এই অঞ্চলে যাদের প্রতি ছয় সপ্তাহ অন্তর খাদ্য সহায়তা পাওয়া উচিত।
[এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে]