শ্রীলংকায় হাজার হাজার মানুষ এবং খৃষ্টান পাদ্রি শনিবার দেশটির প্রধান বাণিজ্য এলাকায় মিছিল করে বিক্ষোভ দিবস পালন করেছেন। ঋণে জর্জরিত দেশটির প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করছেন প্রতিবাদকারীরা। দ্রব্য সঙ্কটে দেশটিতে উদ্বেগ ও ক্ষোভ বেড়েই চলেছে।
প্রতিবাদকারীরা জাতীয় পতাকা ও প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন এবং কেউ কেউ নিজেদের কষ্টগুলো গানের সুরে সুরে বলছিলেন। সঙ্কট সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার প্রশাসনকে দায়ী করেছেন প্রতিবাদকারীরা। তবে, ক্ষমতা ত্যাগ না করার বিষয়ে অবিচল রয়েছেন তিনি, যদিও তার মন্ত্রীসভার বেশিরভাগ সদস্যই পদত্যাগ করেছেন এবং তার প্রতি অনুগত আইনপ্রণেতারা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন। এর ফলে তার জন্য এই পরিস্থিতি থেকে পালানোর কোনও পথ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে এসেছে। তার একটি দল আন্তর্জাতিক ঋণপ্রদানকারী সংস্থাগুলোর সাথে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিক্ষোভে বিপুল সংখ্যক তরুণ অংশগ্রহণ করে। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে তারা নিজেদের সংগঠিত করেছে এবং এ ক্ষেত্রে কোন রাজনৈতিক নেতৃত্বকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। প্রতিবাদকারী তরুণদের মধ্যে অনেকেই প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন, যেগুলোতে লেখা ছিল “আপনারা ভুল প্রজন্মের সাথে সমস্যা তৈরি করেছেন!”
প্রতিবাদকারীরা প্রেসিডেন্টের দফতরের আশপাশে অবস্থান নেন এবং তাদের উদ্দেশ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত স্থান ত্যাগ না করার অঙ্গীকার করেন।
কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের বেশিরভাগই প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে ও তার বড় ভাই, প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের প্রতি ক্ষোভের নিদর্শন। মাহিন্দা রাজপাকসে একটি শক্তিশালী গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন, যেই গোষ্ঠীটি বিগত দুই দশক ধরে দেশটির শাসন ক্ষমতায় রয়েছে। তাদের পরিবারের আরও পাঁচ সদস্য আইনপ্রণেতা, যাদের মধ্যে তিনজন গত রবিবার মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন।
প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় যে, রান্নার গ্যাস ও কেরোসিন তেল কেনার লাইনে কয়েক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে গিয়ে অন্তত চারজন বয়োঃবৃদ্ধ ব্যক্তি মারা গেছেন।
সমালোচকরা রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অধিক মাত্রায় ঋণ নিয়ে এমন সব প্রকল্প অর্থায়নের অভিযোগ তুলেছেন, যেগুলো থেকে কোন অর্থ আয় হয় না। এমন প্রকল্পের মধ্যে চীন থেকে ঋণ নিয়ে তৈরি করা একটি সমুদ্রবন্দরও রয়েছে।