চীনের সাংহাইয়ে রবিবার (১০ এপ্রিল) ১১ হাজার জনেরও বেশি কোভিড থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে এবং স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জোর দিয়ে বলেছে, লকডাউন সত্ত্বেও তাদের অবশ্যই বাড়িতে ফিরে যেতে দেওয়া উচিত। লকডাউনের কারণে চীনের বৃহত্তম এই শহরে চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সাংহাই হেলথ কমিশনের ডিরেক্টর উ জিংলেই বলেছেন, “আমরা আশা করি তাদের পরিবার এবং প্রতিবেশীরা তাদের নিয়ে চিন্তা করবে না বা তাদের প্রতি বৈষম্য দেখাবে না”।
২ কোটি ৬০ লাখ (২৬ মিলিয়ন) লোকের শহরটি গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৬টি নিশ্চিত সংক্রমণ এবং প্রায় ২৪ হাজার উপসর্গহীন সংক্রমণ শনাক্ত করেছে। সাংহাই ২৮ মার্চ থেকে লকডাউনের অধীনে রয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ শনিবার বলেছে যে, আরও একটি গণ–পরীক্ষার পরে বিগত ১৪ দিনে কোনো নতুন সংক্রমণ ঘটেনি এমন অঞ্চলগুলোতে কঠোর ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র শনিবার স্থানীয় আইন ও কোভিড বিধিনিষেধের “যথেচ্ছ প্রয়োগ” বিশেষ করে হংকং এবং জিলিন প্রদেশ ও সাংহাইয়ের কারণে চীনে ভ্রমণের বিষয়ে তার নাগরিকদের সতর্ক করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা কোভিড শনাক্ত হলে “বাবা-মা এবং সন্তানদের বিচ্ছিন্ন হওয়ার” ঝুঁকিরও উল্লেখ করেছেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান প্রতিক্রিয়ায় বলেন, চীন “তার মহামারি প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিত্তিহীন অভিযোগের কারণে ব্যাপক অসন্তুষ্ট এবং দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করেছে”।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস অনুসারে, সাংহাই কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, তারা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে বাসিন্দাদের জন্য দৈনিক সরবরাহের মজুত রেখেছে। লকডাউনের তৃতীয় সপ্তাহে খাদ্য ও অন্য মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহে ঘাটতির অভিযোগের পরে এই তথ্য জানানো হয়।
গ্লোবাল টাইমসের মতে, জেডি ডটকম–এর পাশাপাশি আলিবাবার ডেলিভারি অ্যাপগুলো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে, যাতে প্রত্যেকে শাকসবজি, ফল ও অন্য পণ্যগুলো হাতে পায়।
সাংহাই চীনের “শূন্য-কোভিড” কৌশলের, যার লক্ষ্য প্রতিটি সংক্রামিত ব্যক্তিকে বিচ্ছিন্ন করা, ক্রমবর্ধমান মানবিক এবং অর্থনৈতিক ব্যয়ের ওপর আলোকপাত করছে।
এ ছাড়া গত দুই সপ্তাহে সেখানে আটটি স্থানীয় কোভিড সংক্রমণের খবর পাওয়ার পরে রাজধানী বেইজিংয়ের একটি এলাকা, এরজিফাং, শনিবার উচ্চ-ঝুঁকির এলাকা হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।
মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে চীন তার সবচেয়ে খারাপ স্থানীয় প্রাদুর্ভাবের সম্মুখীন হয়েছে। চীনে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বন্ধ রয়েছে, যদিও বিশ্বের বেশির ভাগ অঞ্চলে মানুষ ভাইরাসের সঙ্গে সহাবস্থানের উপায় অনুসন্ধান করছে।