অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

দক্ষিণ আফ্রিকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চীনের বাণিজ্য


ভারী বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় ধুয়ে গেছে শিপিং কনটেইনারগুলি। ডারবান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ১২ এপ্রিল, ২০২২।
ভারী বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় ধুয়ে গেছে শিপিং কনটেইনারগুলি। ডারবান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ১২ এপ্রিল, ২০২২।

জোহানেসবার্গ — দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যাগুলির মধ্যে অন্যতম এই বন্যায় ইতোমধ্যে ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৪০,০০০ মানুষ। সবচেয়ে বিধ্বংসী আঘাতটি হেনেছে পূর্বাঞ্চলীয় শহর ডারবানে, ওখানকার একটি সমুদ্রবন্দরও এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বন্দরটি সম্পূর্ণরূপে কাজ না করার কারণে, সরবরাহ সংযুক্তি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তম বানিজ্যিক অংশীদার, চীন এবং অন্যান্য দেশগুলির সাথে তাদের আমদানি ও রপ্তানি ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বন্যার কারণে দেশব্যাপী জাতীয় দুর্যোগের ঘোষণা দেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে বন্যার কারণ হিসেব দায়ী করেন, তবে কিছু সমালোচক দুর্বল অবকাঠামোকেই এই বন্যার কারণ বলে মনে করেন। কারণ আর যাই হোক বাস্তবতা হল, ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে অস্থায়ী খুপরিতে বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।

বন্দরের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে রামাফোসা বলেছেন, “বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডারবান বন্দর - যা মহাদেশের বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম শিপিং টার্মিনালগুলির মধ্যে একটি, এবং এটি আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ”।

তিনি আরও বলেন, বন্দরের রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৩,০০০ ভারী যানবাহন চলাচল করে, ওই রাস্তাগুলোও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সাউথ আফ্রিকান ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র চীন-আফ্রিকা গবেষক কোবাস ভ্যান স্ট্যাডেন বলেছেন, বন্দরে সমস্যায় যে সব দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তাদের মধ্যে চীন অন্যতম।

তিনি ভিওএ কে বলেন, “ডারবানের পরিস্থিতির শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য নয়, সমগ্র চীন-আফ্রিকা বাণিজ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ”।

তিনি আরও বলেন, “চীন-আফ্রিকার মোট বাণিজ্যিক পণ্যের প্রায় ২০ শতাংশ ডারবানের মধ্য দিয়ে সরবরাহ করা হয়। এসব বাণিজ্যিক পণ্যের মধ্যে রয়েছে, বিশেষ করে কঙ্গো এবং জিম্বাবুয়ে থেকে আসা কোবাল্ট, তামা এবং লিথিয়ামের মতো সম্পদ”।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কন্টেইনার লাইন মারস্ক, গত সপ্তাহে বন্দরে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তারা ইমেইলের মাধ্যমে ভিওএ কে জানায়, বন্যায় তাদের গুদামগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা এখনও চালু হয়নি। কোম্পানিটি বলছে, জাহাজের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হলেও, রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবার কারণে পণ্যগুলির টার্মিনালে প্রবেশ করা কিংবা বা টার্মিনাল ছেড়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

দক্ষিণ আফ্রিকার এগ্রিকালচারাল বিজনেস চেম্বারের প্রধান অর্থনীতিবিদ ওয়ানডিল সিহলোবো ভিওএ-কে বলেন, বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে বলে তিনি মনে করেন।

XS
SM
MD
LG