বিশ্বের ২০টি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের সংস্থার এক বৈঠক থেকে বুধবার যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ব্রিটেনের জ্যেষ্ঠ নেতারা ওয়াকআউট করেন। রাশিয়ার অর্থমন্ত্রী অ্যান্টন সিলুয়ানভ সহ রাশিয়ার কর্মকর্তাদের ঐ বৈঠকে উপস্থিত থাকতে অনুমতি দেওয়ার জি-টুয়েন্টির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এমন পদক্ষেপ নেন ঐ নেতারা।
ইউক্রেন আক্রমণের কারণে রাশিয়াকে বৈঠকটিতে নিষিদ্ধ করতে, যুক্তরাষ্ট্র ও জি-টুয়েন্টির অন্যান্য সদস্যরা ইন্দোনেশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। সংস্থাটির সভাপতির পদটি আবর্তনশীল, অর্থাৎ প্রতি মেয়াদে একজন করে সদস্য সভাপতি হয়ে থাকে। বর্তমান মেয়াদে ইন্দোনেশিয়া সংস্থাটির সভাপতির পদে রয়েছে। রাশিয়াকে অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সংস্থাটিতে বিদ্যমান উল্লেখযোগ্য দ্বিমত সামনে তুলে এনেছে।
যদিও ইউক্রেন জি-টুয়েন্টির সদস্য দেশ নয়, তবু ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্যমিত্র কুলেবা এবং অর্থমন্ত্রী সারহেই মারশেঙ্কোকে বৈঠকটিতে অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অধিবেশনের শুরুতে প্রদত্ত বক্তব্যে কুলেবা অঙ্গীকার করে বলেন যে, শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে ইউক্রেন রাশিয়ার কাছে কোন ভূখন্ড সোপর্দ করবে না। ওয়াকআউটে কুলেবা ও মারশেঙ্কো-ও যোগ দেন।
সিলুয়ানভ তার বক্তব্যে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আলোচনার রাজনীতিকরণের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেন যে, তেমনটা বিশ্ব অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
তবে জি-টুয়েন্টির সবচেয়ে বড় সদস্যদেশগুলোর মধ্যে কয়েকটি - যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানী, জাপান এবং কানাডা – ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপে পরিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করলেও অন্যান্য অনেক দেশই তা করেনি। সেসব দেশের মধ্যে রয়েছে চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
বার্ষিক জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে রাষ্ট্রপ্রধানরা অংশগ্রহণ করলেও, বুধবারের ওয়াশিংটনের বৈঠকটিতে সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা অংশ নেন।
নভেম্বরের জন্য নির্ধারিত এই বছরের সম্মেলনটি, ইন্দোনেশিয়ার সভাপতিত্বের বরাতে বালিতে অনুষ্ঠিত হবে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ইঙ্গিত করেছেন যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ঐ সম্মেলনে বালিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এর ফলে, সংস্থাটির অন্যান্য সদস্যদের প্রতিবাদের মুখে পড়েছে এমন সিদ্ধান্ত। কিছু সদস্যদেশ সম্মেলনটি বর্জন করতে পারে বলেও আভাস পাওয়া যাচ্ছে।