অবরুদ্ধ বন্দরনগরী মারিউপোল থেকে শনিবার মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে ইউক্রেন।
ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক টেলিগ্রামে জানান যে, কর্তৃপক্ষ নারী, শিশু ও বয়োঃবৃদ্ধদের শহরটি থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করবে। সেখান থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়ার এর আগের চেষ্টাগুলো রুশ সৈন্যরা ভেস্তে দিয়েছিল। কর্তৃপক্ষ জানায় যে, শনিবার সর্বসাধারণের জন্য মানবিক করিডোর উন্মুক্ত থাকার সম্ভাবনা কম। কর্মকর্তাদের অনুমানে মারিউপোলে ১,০০,০০০ পর্যন্ত মানুষ আটকা পড়ে আছেন।
এ দিকে রাশিয়াকে প্রায় ৩০ কোটি ডলারের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছিল ফ্রান্স ও জার্মানি। ঐ সরঞ্জামগুলো এখন “সম্ভবত ইউক্রেনে ব্যবহার করা হচ্ছে”। ইউরোপীয় কমিশনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে, ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ সংবাদপত্র নিজস্ব এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়াকে অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জুড়ে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সরঞ্জামগুলো পাঠানো হয়। ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া অঞ্চল দখল করে নেওয়ার পর রাশিয়ার উপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
তবে, আত্মপক্ষ সমর্থনে জার্মানি বলছে যে, সেগুলো “দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য” সরঞ্জাম ছিল এবং রাশিয়া বলেছিল যে ঐ সরঞ্জামগুলো সামরিক নয়, বরং বেসামরিক কাজের জন্য প্রয়োজন।
অপরদিকে, পত্রিকাটি জানিয়েছে যে, রাশিয়াতে পাঠানো সরঞ্জামের মধ্যে “বোমা, রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বন্দুক” রয়েছে। ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠানগুলোও “রাশিয়ার ১,০০০ এরও বেশি ট্যাংকের জন্য থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা সহ জঙ্গি বিমান ও হেলিকপ্টারের জন্য নেভিগেশন সিস্টেম” সরবরাহ করেছিল বলে, দ্য টেলিগ্রাফ জানায়।
পত্রিকাটি আরও জানিয়েছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তত ১০টি সদস্য দেশ রাশিয়াকে প্রায় ৩৮ কোটি ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে ৭৮% শতাংশই ফ্রান্স ও জার্মানির কোম্পানিগুলো সরবরাহ করেছে।
দ্য টেলিগ্রাফের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়াকে অস্ত্র বিক্রি করা অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রিয়া, ব্রিটেন, বুলগেরিয়া, চেক রিপাবলিক এবং ইতালী।
রাশিয়াকে কোন কোন দেশ অস্ত্র বিক্রি করেছে সেটির এক অনুসন্ধানের বিশ্লেষণ করে ইইউ। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে রোমানিয়ার এক সদস্য, ক্রিস্টিয়ান টারহেস, দ্য টেলিগ্রাফকে ইইউ এর বিশ্লেষণটি প্রদান করেন।
রাশিয়ার এক জেনারেলের করা মন্তব্যকে শুক্রবার লুফে নেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি। ইউক্রেনে সফল হলে রাশিয়া যে অন্যান্য দেশেও আক্রমণ চালাবে, তারই প্রমাণ হিসেবে ঐ মন্তব্যগুলোকে তুলে ধরেন জেলেন্সকি। ঐ জেনারেল বলেছিলেন যে, রাশিয়া ইউক্রেনের সম্পূর্ণ দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল দখল করতে চায় এবং এর মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী মলডোভার একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশের সাথে নিজেদের যুক্ত করতে চায়।
জেলেন্সকি তার সান্ধ্যকালীন বক্তব্যে শুক্রবার বলেন, “আমি যা একাধিকবার বলেছি এটা তাই নিশ্চিত করেছে: ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণটি শুরুমাত্র।”