ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন রবিবার কিয়েভ সফর করবেন।
জেলেনস্কি শনিবার সংবাদদাতাদের বলেন, “আগামীকাল, আমেরিকান কর্মকর্তারা আমাদের সাথে দেখা করতে আসছেন। আমি প্রতিরক্ষা সচিব [লয়েড অস্টিন] এবং অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সাথে দেখা করব। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর এটাই হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকর্তাদের প্রথম কোনও আনুষ্ঠানিক সফর।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এই সফরের বিষয়ে কোনো নিশ্চিতকরণ তথ্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, ব্রিটিশ কর্মকর্তারা শনিবার বলেছেন, রাশিয়ান সৈন্যরা পূর্ব ফ্রন্টে নতুন করে আক্রমণ ঘোষণা করা সত্ত্বেও, নতুন কোনও উল্লেখযোগ্য অর্জন তারা করতে পারেনি। এছাড়া, ইউক্রেন রবিবার অর্থোডক্স ইস্টারের আগে দেশব্যাপী কারফিউ ঘোষণা করেছে।
ইউক্রেন জানিয়েছে, রুশ বাহিনী অবরুদ্ধ বন্দর শহর মারিউপোল থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় বাধা দিয়েছে।
মারিউপোল শহরের কর্মকর্তা পেট্রো আন্দ্রিউশচেঙ্কো টেলিগ্রামে, "উচ্ছেদ প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়েছিল," উল্লেখ করে বলেছেন, প্রায় ২০০ জন লোক নিরাপদ স্থানে সরে যাবার জন্য সরকার নির্ধারিত এলাকায় জড়ো হয়েছিল, কিন্তু রাশিয়ান বাহিনী সেখান থেকে তাদের "ছত্রভঙ্গ" করে দেয়।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, রুশ বাহিনী মারিউপোলে একটি ইস্পাত কারখানায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে। অবরুদ্ধ বন্দর শহরটিতে প্রতিরোধের এটি সর্বশেষ স্থান, যা মস্কোর জন্য কৌশলগতভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়ান বাহিনী মারিউপোলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করলে, ইউক্রেনীয়রা একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হারাবে।
রাশিয়া শনিবার কৃষ্ণ সাগরের বন্দর শহর ওডেসায় অন্তত ছয়টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, এতে পাঁচজন নিহত হয়েছে বলে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে, তাদের সৈন্যরা ওডেসার একটি ডিপোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলি দ্বারা ইউক্রেনীয় সেনাদের কাছে পাঠানো অস্ত্র ছিল।
ইউক্রেন কর্মকর্তারা শনিবার বলেছেন, ইউক্রেনে এ পর্যন্ত ২১,৬০০ রুশ সেনা মারা গেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকি রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে "যুদ্ধের অবসান" ঘটানোর লক্ষ্যে আবারও বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি শনিবার কিয়েভের কেন্দ্রস্থলে একটি মেট্রো স্টেশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আমি মনে করি, যে এই যুদ্ধটি শুরু করেছে, সেই এটি শেষ করতে সক্ষম হবে।” তিনি আরও বলেন, তিনি পুতিনের সাথে "সাক্ষাত করতে ভয় পান না" যদি এই সাক্ষাতের ফলে দুই দেশের মধ্যে শান্তি চুক্তি সম্পাদনের পথ উন্মুক্ত হয়।