যুদ্ধপীড়িত বাস্তুচ্যুত ইউক্রেনীয়রা মাতৃভূমি থেকে অনেক দূরে পূর্ব ইউরোপ জুড়ে গির্জাগুলোতে রবিবার (২৪ এপ্রিল) জড়ো হয়েছিলেন ইস্টার উদযাপন করতে। তারা জানেন না কবে ঘরে ফিরবেন বা আদৌ ফিরতে পারবেন কি না। বাস্তুচ্যুত এই ইউক্রেনীয়রা রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের অবসানের জন্য প্রার্থনা করেন।
হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের সেন্ট মাইকেল চার্চে শত শত ভক্ত ভিড় করেন। একজন ইউক্রেনীয় ধর্মযাজক পরিচালিত উপাসনায় অংশ নেন তারা। এই প্রার্থনায় ইউক্রেনীয় জনগণের সংহতি এবং যারা দেশে থেকে গেছেন তাদের জন্য আর্শীবাদ করা হয়।
জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে অর্থোডক্স অনুসারীদের মাধ্যমে পালন করা ইস্টারের প্রাক্কালে প্রায় ৫২ লাখ ইউক্রেনীয় রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
বেশির ভাগই ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্তের দেশগুলোতে প্রবেশ করেছেন। দুই মাস আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২৯ লাখ ইউক্রেনীয় পোল্যান্ডে পালিয়ে গেছেন। আরও প্রায় ৭ লাখ ৭৫ হাজার রোমানিয়াতে এবং ৪ লাখ ৯০ হাজার হাঙ্গেরিতে পাড়ি দিয়েছেন।
রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে, কয়েক ডজন ইউক্রেনীয় শরণার্থী এবং সেই সঙ্গে রোমানিয়ান ভক্তরা ইস্টার উপাসনার জন্য ব্রানকিউসি প্যারিশ চার্চে এসেছিলেন। তারা ইউক্রেনীয় ভাষায় ধর্মীয় সংগীত উপভোগ করেন। একজন যাজক উপাসকদের প্রতি বলে ওঠেন, “যীশুর উত্থান হয়েছে”! উত্তরে তারা বলেন, “নিশ্চয়ই তিনি পুনরুত্থিত হয়েছেন”!
হাঙ্গেরিয়ান ইউক্রেনীয় কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারওম্যান ইয়ারোস্লাভা হোরতিয়ানি বলেছেন যে, ইস্টারে ইউক্রেনীয়দের একত্রিত করার ফলে তারা নিজেদের এবং যাদের ফেলে এসেছেন তাদের জন্য প্রার্থনা করার সুযোগ পেয়েছেন।
একত্রিশ বছর বয়সী কেট গ্ল্যাডকা, যিনি এক মাস আগে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে হাঙ্গেরিতে এসেছেন, বলেন যে, তিনি ইস্টার উপাসনার সময় তার চোখের জল ধরে রাখতে পারছিলেন না। অথচ এই সময়টি বরাবরই তার জন্যে আনন্দ উদযাপনের সময়।