বুধবার (২৭ এপ্রিল), জাতিসংঘে শান্তি বিনির্মাণের জন্য অর্থায়ন বিষয়ে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের, প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
শান্তি বিনির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত, অনুমেয় ও টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিতকরণের জন্য এ বৈঠকে সদস্য দেশগুলো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, জাতিসংঘ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ এবং সচিবালয়, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (আইএফআইএস) এবং নাগরিক সমাজের সংস্থাগুলোকে একত্র করেছে।
শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের চেয়ার হিসেবে, রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা কমিশনের পক্ষে একটি বিবৃতি প্রদান করেন। যাতে, সাধারণ পরিষদের বিবেচনার জন্য, শান্তিপ্রতিষ্ঠার অর্থায়ন সংক্রান্ত কিছু সুপারিশ ছিল।
নিউইয়র্কে, বাংলাদেশ মিশন থেকে প্রাপ্ত বার্তা অনুসারে জানা যায়, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থায়ন একটি দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগ। ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য, বৈষম্য এবং করোনা মহামারির কারণে, আগের দুর্বলতাগুলো আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বলেন, “এই উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকটি, শান্তি বিনির্মাণ অর্থায়নের জন্য সমস্ত বিকল্প যেমন- স্বেচ্ছাসেবী এবং নির্ধারিত উৎসসমূহের পাশাপাশি উদ্ভাবনী উৎসগুলোকে বিবেচনা করার একটি সুযোগ দেয়। যাতে এই বিষয়ে সত্যিকার অগ্রগতি হয়।”
অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ, সফল জাতি গঠনে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশের জন্ম একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ থেকে।”
রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন, শান্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা উল্লেখ করে বলেন, “যুদ্ধোত্তর জাতি গঠনের জন্য, আমাদের একমাত্র মূলধন ছিল, আমাদের মানবিক পুঁজি এবং সহনশীলতা। অনেক ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে, বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে।”
“আমাদের শান্তিরক্ষীরা টেকসই শান্তি ও উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠান-নির্মাণ, দুর্বল বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং নারী ও যুবকসহ সকলের সঙ্গে জড়িত থাকার মাধ্যম, সংঘাত-আক্রান্ত দেশগুলোকে সাহায্য করে;” বলেন রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন।
তিনি সেই প্রকল্পগুলোকে সমর্থন করার জন্য, শান্তিরক্ষা মিশনে প্রোগ্রামেটিক তহবিল বাড়ানোর গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূত, এমডিবি, আইএফআই, আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক সংস্থাগুলির পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পী এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের সুপারিশ করেন।
সভা থেকে একটি কার্যকর ফলাফল আনার জন্য, সাধারণ পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে, রাষ্ট্রদূত আশ্বস্ত করে বলেন, শান্তি বিনির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত, অনুমেয় এবং টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ গঠনমূলকভাবে ব্যবহারিক উপায় খুঁজতে থাকবে।
রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন, জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের ১২০ সদস্যের পক্ষেও বিবৃতি দেন।
উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের পর, রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন স্লোভেনিয়ার উন্নয়ন সহযোগিতামন্ত্রী ড. স্ট্যানিস্লাভ রাশানের সঙ্গে, একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। ড. স্ট্যানিস্লাভ, উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে স্লোভেনিয়ান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এ সময় তারা, পারস্পরিক উদ্বেগের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।