রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর পরই হ্যারিসন জোজেফোভিচ শিকাগো পুলিশের চাকরি ছেড়ে বিদেশ চলে যান। তিনি বলেন, একজন প্রাক্তন সেনা হিসেবে ইউক্রেনীয়দের সাহায্য করতে আমেরিকান স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে তিনি যোগ না দিয়ে পারেননি।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনে নিহত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন মেরিন রুশ- ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত প্রথম আমেরিকান নাগরিক বলে মনে করা হয়। উইলি জোসেফ ক্যানসেল (২২) চুক্তিভিত্তিক একটি সামরিক সংস্থার হয়ে কাজ করার সময় সোমবার মারা যান। ওই সামরিক সংস্থা তাকে ইউক্রেনে পাঠিয়েছিল। তার মা রেবেকা ক্যাব্রেরা সিএনএনকে জানিয়েছেন।
সামরিক অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন অনেকেসহ বহু আমেরিকানরা অন্য অনেক দেশের স্বেচ্ছাসেবক সেনাদের সঙ্গে মিলে ইউক্রেনের পক্ষে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী সামরিক সরবরাহ, মানবিক সহায়তা এবং অর্থ পাঠানো ব্যতীত সরাসরি যুদ্ধে জড়িত নয়।
রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের দূতাবাস যুদ্ধে সাহায্য করতে চায় এমন হাজার হাজার আমেরিকানদের অনুসন্ধানে কাজ করছে এবং ইউক্রেন তাদের বিদেশি বাহিনী ইন্টারন্যাশনাল লিজিয়ন অফ ডিফেন্স অফ ইউক্রেনের জন্য স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
“যারা ইউরোপ এবং বিশ্বের নিরাপত্তা রক্ষায় যোগ দিতে চান, তারা ২১ শতকের হানাদারদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয়দের পাশে দাঁড়াতে পারেন”, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি একটি নিয়োগ বার্তায় বলেন।
টেক্সাসের আনজা ওসমন ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে ইরাক ও আফগানিস্তানে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বলেন, তিনি নিজেই ইউক্রেনে গিয়েছিলেন।
৩০ বছর বয়সী ওসমন জানান, সেপ্টেম্বরের আগে তার মা তাকে বাড়ি ফিরতে বলেছেন। কিন্তু আপাতত তিনি উদ্বিগ্ন যে, লেভিভে যে হোটেলে তিনি অবস্থান করছেন, সেখান থেকে বের হওয়া এবং কাছাকাছি যুদ্ধরত আরেকটি দলের সঙ্গে যোগদান কঠিন হবে।
অভিজ্ঞ ইউএস মেরিন এডি ইটু বলেছেন যে, ইউক্রেনকে সাহায্য করতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। কলোরাডোতে তার পোষা বিড়ালটিকে দেখার জন্য একজন বন্ধুকে দায়িত্ব দিয়েছেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়াগোর বাড়ি ছেড়েছেন, যেখানে তিনি মাত্র দুই সপ্তাহ থেকেছেন। তিনি প্রথমে একটি সাহায্য সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছিলেন কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক বাহিনীতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
৩৬ বছর বয়সী ইটু বলেন, তিনি কোনোভাবেই বাড়িতে থাকতে পারছিলেন না।
শিকাগোর প্রাক্তন পুলিশ কর্মী জোজেফোভিচ বলেছেন যে, হাজার হাজার আমেরিকান এবং অন্য স্বেচ্ছাসেবক ইউক্রেনে রয়েছেন। দেশে একাধিক সংস্থা কাজ করছে এবং জোজেফোভিচ বলেছেন যে, তার সংস্থাই সারা দেশজুড়ে অনেক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে। যাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জন সরাসরি যুদ্ধে নিয়োজিত।
তিনি বলেন, কিন্তু আরও অনেক কাজ আছে। স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দল ৪৪ মিলিয়ন মানুষের দেশটিতে চিকিৎসা ও খাদ্য সরবরাহ করছে এবং অন্যরা শরণার্থী ও অন্যদের সঙ্গে কাজ করছে, যাদের তাদের বাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে।