অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নেতাদের হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানাবে এবং কূটনৈতিক যোগাযোগ বাড়াবে


ফাইল: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তাযর ইউনিভার্সিটাস ইন্দোনেশিয়াতে বাইডেন প্রশাসনের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক কৌশল সম্পর্কে মন্তব্য করছেন। ১৪ ডিসেম্বর ২০২১।
ফাইল: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তাযর ইউনিভার্সিটাস ইন্দোনেশিয়াতে বাইডেন প্রশাসনের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক কৌশল সম্পর্কে মন্তব্য করছেন। ১৪ ডিসেম্বর ২০২১।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই বছরের শেষে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর নেতাদের হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানাবেন বলে সোমবার (২ মে) একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলের সঙ্গে তার সম্পর্ক সম্প্রসারণে প্রচেষ্টা বৃদ্ধিসহ সমগ্র দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য আরও কূটনীতিক পাঠাবে এবং সংকটে থাকা এই অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর জোট প্যাসিফিক আইল্যান্ড ফোরামের সঙ্গে এক সঙ্গে কাজ করতে কর্মী নিয়োগ করবে।

নিউজিল্যান্ডে অকল্যান্ড বিজনেস চেম্বার কর্তৃক আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক শীর্ষ সম্মেলনের সময় ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক সমন্বয়ক কার্ট ক্যাম্পবেল এই মন্তব্য করেন এবং রয়টার্স সংবাদ সংস্থা এটি প্রকাশ করে।

সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়ে ক্যাম্পবেল বলেন, “প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রকে সক্রিয় হতে হলে আমাদের অবশ্যই আরও বেশি কিছু করতে হবে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোর জন্য আমাদের অনেক কিছু করতে হবে”।

ক্যাম্পবেল উপস্থিতদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রদূত পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। সেসব দেশে এখন যুক্তরাষ্ট্রের যৎসামান্য কূটনৈতিক উপস্থিতি রয়েছে।

সলোমন দ্বীপপুঞ্জ চীনের সঙ্গে একটি গোপন নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করার কয়েক সপ্তাহ পরে এই মন্তব্য এল। দুই দেশের মধ্যকার এই চুক্তির ফলে সুদূর পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

অনুঘটক সলোমন দ্বীপপুঞ্জ

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্যমতে, বাইডেন প্রশাসন অঞ্চলটিতে ক্রমবর্ধমান চীনের প্রভাব হ্রাস করতে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারগুলোর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে নিবিড় ও গভীরভাবে কাজ করছে।

কিন্তু সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সাম্প্রতিক চুক্তি কূটনৈতিকভাবে এবং আইনি প্রক্রিয়ায় এই অঞ্চলের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি জোরদার করার বিষয়ে একাধিক প্রস্তাবিত বিল কংগ্রেসে মুলতুবি অবস্থায় রয়েছে।

জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ওয়ালশ স্কুল অফ ফরেন সার্ভিসের সেন্টার ফর অস্ট্রেলিয়ান, নিউজিল্যান্ড ও প্যাসিফিক স্টাডিজের পরিচালক অ্যালান টিডওয়েল বলেছেন, “দৃশ্যমানভাবেই আজকাল কৌশলগত প্রতিযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে একটি বিরাট চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে”।

উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ

টিডওয়েল বলেছেন যে, হোয়াইট হাউজে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় নেতাদের আমন্ত্রণের প্রস্তাব এই অঞ্চলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে বাইডেন প্রশাসনের চলমান প্রচেষ্টার সপক্ষে একটি বড় পদক্ষেপ।

এই অঞ্চলের কোনো রাষ্ট্রপ্রধান হোয়াইট হাউজে সর্বশেষ এসেছিলেন ২০১৯ সালে। তখন মাইক্রোনেশিয়া, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ও পালাউয়ের নেতারা যুক্তরাষ্ট্র সফরে করেন।

প্যাসিফিক আইল্যান্ড ফোরাম প্রসঙ্গ

সোমবার ক্যাম্পবেল এই অঞ্চলে সহযোগিতা ও নিরাপত্তাবিষয়ক আন্তসরকারি জোট প্যাসিফিক আইল্যান্ড ফোরামের বর্তমান অবস্থা নিয়েও মন্তব্য করেন।

এখন পর্যন্ত ফোরামটিতে ১৮টি সদস্য রয়েছে। সদস্য দেশগুলো হলো—অস্ট্রেলিয়া, কুক দ্বীপপুঞ্জ, ফিজি, ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া, কিরিবাতি, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মাইক্রোনেশিয়া, নাউরু, নিউ ক্যালেডোনিয়া, নিউজিল্যান্ড, নিউয়ে, পালাউ, পাপুয়া নিউগিনি, সামোয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, টোঙ্গা, টুভালু ও ভানুয়াতু।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফোরামের নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত হলে পাঁচ সদস্য—কিরিবাতি, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মাইক্রোনেশিয়া, নাউরু ও পালাউ—সংগঠন ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে গত মাসে তারা এই বিষয়টি অনির্দিষ্টকালের জন্য “স্থগিত” করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়।

রয়টার্সের মতে, ক্যাম্পবেল অকল্যান্ডে উপস্থিতদের উদ্দেশে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্যাসিফিক আইল্যান্ড ফোরামের ভবিষ্যত নিয়ে “আশাবাদী” এবং এই জোটের সঙ্গে কাজ করার জন্য বেশিসংখ্যক কূটনীতিক নিয়োগ করবে।

XS
SM
MD
LG