বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনি দুর্বল হয়ে শক্তি হারাচ্ছে। এটি এখন সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বুধবার (১১ মে) সকালে ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের অন্ধ্র উপকূলে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি আরও দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার বন্দর থেকে ১ হাজার ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা বন্দর থেকে ১ হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা বন্দর থেকে ১ হাজার ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, এটি উত্তর-পশ্চিম বা উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় অঞ্চলের কাছাকাছি সাগর খুবই উত্তাল থাকবে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। তাদের গভীর সাগরে না যেতেও বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে।
২৪ ঘণ্টার বৃষ্টির পূর্বাভাস
সারা দেশে আগামী ২৪ ঘণ্টায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বর্ষণ হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, “রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে”।
সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে বুলেটিনে বলা হয়েছে।
এদিকে অশনি দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ায় রাতভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর বুধবার সকালেও ফরিদপুর ও পটুয়াখালীতে বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে ফরিদপুর আবহাওয়া অফিস। তারা জানিয়েছে, “আগামী আরও দুই দিন এ অবস্থা চলবে”।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ রাহাত হোসেন বলেন, “জেলায় আরও দুই দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে”।
এ ছাড়া জেলার টানা দুই দিনের বৃষ্টির প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে।