ইউক্রেন আগ্রাসনের কারণে এই সপ্তাহে রাশিয়ান অভিজ্ঞ কূটনীতিক বরিস বোন্দারেভের পদত্যাগ ক্রেমলিনের জন্য বিব্রতকর তবে বিশ্লেষকদের মতে বেশির ভাগ রুশ কর্মকর্তা ভয়ের কারণে ভিন্নমত প্রকাশ করতে বিরত থাকছেন।
৪১ বছর বয়সী বোন্দারেভ রাশিয়ার কূটনীতিক হিসেবে ২০ বছরের কর্মজীবনে কম্বোডিয়া ও মঙ্গোলিয়ায় কাজ করেছেন। এই সপ্তাহ পর্যন্ত তিনি জেনেভায় জাতিসংঘে রাশিয়ার মিশনে নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে মস্কোর ভূমিকা নিয়ে কাজ করছিলেন।
বন্দারেভ সোমবার ফেইসবুক ও লিংকডইনে পোস্ট করা এক চিঠিতে নিজের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঐ চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “কূটনীতিক হিসেবে আমার কর্মজীবনের ২০ বছর ধরে আমি আমাদের পররাষ্ট্রনীতির বিভিন্ন দিক দেখেছি কিন্তু এই বছরের ২৪শে ফেব্রুয়ারীর আগে পর্যন্ত আমি আমার দেশের জন্য এত লজ্জিত বোধ করিনি।” চিঠিতে তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বসাম্প্রতিক আক্রমণের তারিখটি উল্লেখ করেছেন।
ঐ আগ্রাসনকে তিনি মস্কোর একটি বিশেষ সামরিক অভিযান হিসাবে উল্লেখ করে “ইউক্রেনীয় জনগণ এবং রাশিয়ার জনগণের বিরুদ্ধে একটি অপরাধ" হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি লিখেছেন, "যারা এই যুদ্ধের কল্পনা করেছিল তারা একটি জিনিষই কেবল চায়ঃ চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে--- আর তা অর্জনের জন্য যত জীবন বিসর্জন দিতে হোক না কেন তা তারা অবলীলাক্রমেই করবে।”
পদত্যাগ করার পর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাথে কথা বলার সময় বোন্ডারেভ বলেন যে তার কাছে বিকল্প আর কোন কিছু ছিল না।
মস্কো স্টেট ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস-এর সাবেক অধ্যাপক ভ্যালেরি সোলোভে যিনি রাশিয়ার বেশ কয়েকজন কূটনীতিককে পড়িয়েছেন তিনি বলছেন, এই পদত্যাগ ক্রেমলিনের জন্য বিব্রতকর হবে।
বেলফাস্টের কুইন্স ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যালেক্স টিটোভ বলেন, ক্রেমলিন বিব্রত- কিন্তু প্রকাশ্যে বোন্ডারেভের পদত্যাগের পরে তারা আতঙ্কিত হবে না।
বরিস বোন্ডারেভ অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, তিনি তার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনামলে বিদেশে বসবাসকারী বেশ কয়েকজন ভিন্নমতাবলম্বীকে রাশিয়া হত্যা করেছে বা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। যদিও মস্কো ঐ ধরনের কর্মকাণ্ডকে অস্বীকার করেছে। ভ্যালেরি সোলোভেই বলেন ক্রেমলিন আনুগত্যর জন্য চাপ প্রয়োগ করে থাকে।
“সোলোভি বলেন, “ভয়। ভয় এবং কঠোর নিয়ন্ত্রণ। পুতিনের বিরুদ্ধে বক্তারা হুমকির মুখে রয়েছেন, সম্ভাব্য হুমকির মুখে আছেন এবং তারা এটা পুরোপুরি ভাবেই সেটা জানেন।”