অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধির সুবিধা নিতে পারে আসাম: পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন


বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন
বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, "আসাম, বাংলাদেশের গতিশীল আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধির সুবিধা নিতে পারে।" তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো এবং পর্যটনের প্রসারের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শুক্রবার ( ২৭ মে), আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে,পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে,ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য,আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার সাক্ষাৎকালে, আব্দুল মোমেন এ কথা বলেন।

আসামের খানাপাড়ার কৈনাধারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে, আসামের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বৈঠক করেন।

এসময়, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র জন্য, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন।

জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের উন্নয়ন, একে অপরের পরিপূরক এবং অনেক ভারতীয় বাংলাদেশে কাজ করছে।

ভারতে, বাংলাদেশ চতুর্থ বৃহত্তম রেমিট্যান্স পাঠানোর দেশ বলেও উল্লেখ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।

এসময়, আব্দুল মোমেন, ভারতের আসাম ও বাংলাদেশের সিলেটের মানুষের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী যোগাযোগের কথাও উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ সম্পর্কের সেরা সময় উপভোগ করছে।

মোমেন পরামর্শ দেন যে, নদী পরিবহন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য একটি কার্যকর উপায় হতে পারে।

বৈঠকে মোমেন উল্লেখ করেন, আসাম ও ভারত তার হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। কারণ তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে আসামে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

তিনি জানান, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা ভারত থেকে আসা যোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বাংলাদেশে ২০০টি বৃত্তি বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মোমেন ২০২১ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন। তারা সেসময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর মতো বাংলাদেশের যুগান্তকারী কিছু অনুষ্ঠান উদযাপনে অংশ নেন।

২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে ঢাকা ও নয়াদিল্লি ছাড়াও বিশ্বের ১৮টি নির্বাচিত রাজধানীতে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী শর্মা এসময় বলেন, আসাম ব্যবসা, বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রচারের মাধ্যমে, দুই দেশের জনগণের সাধারণ সুবিধার জন্য, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহী।

তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাম্প্রতিক গতির প্রশংসা করেন।কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যের প্রশংসা করেন আসামের মূখ্যমন্ত্রী।

ব্রিটিশ আমলে বাণিজ্যে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর সঙ্গে রেল যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করেন শর্মা।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী জানান, আসাম উন্নত চিকিৎসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। ফলে বর্তমানে চিকিৎসা ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশে বাংলাদেশের জনগণের অন্যতম গন্তব্য হতে পারে আসাম।

মোমেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আয়োজিত একটি নৈশভোজেও যোগ দেন। সেখানে আসিয়ান দেশসমূহের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আাব্দুল মোমেন ২৮-২৯ মে ২০২২ তারিখে দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য ন্যাচারাল অ্যালাইজ ইন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারডিপেনডেন্স (এনএডিআই)-এর ৩য় সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার গুয়াহাটিতে পৌঁছেছেন।

XS
SM
MD
LG