মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে নিয়ে যে সাংবাদিকরা রিপোর্ট করছেন তাদের গ্রেফতার বা আহত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকায় অনেক সাংবাদিক সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বা প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছেন।
সেখান থেকেই এইচসা মু-এর মতো সাংবাদিকরা তাদের পাঠক-শ্রোতাদের জন্যসংবাদ দেয়ার চেষ্টা করেন।
এইচসা মু থাই সীমান্ত থেকে কাজ করেন। তিনি মিয়ানমারের কাইন রাজ্যে তার নিজস্ব সূত্রে বা লোকজনের কাছ থেকে সরাসরিসংগৃহীত প্রমাণাদী নথিবদ্ধ করেন। তিনি যে বিষয় নিয়ে কাজ করেন তার মধ্যে রয়েছে সামরিক সংঘর্ষ এবং সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে কিভাবে সম্প্রদায় এবং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকজনকেপ্রভাবিত করছে।
এটা একটু কঠিন, যখন মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর যুদ্ধ বিমান ও হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালানো হয় তখন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটিতেও যাতায়াত করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
আক্রমণের শিকার
কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন সেনাবাহিনীর ৫ম ব্রিগেড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলটি জান্তা বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়েছে ।
এইচএসা মু একটি গ্রামের বোমা বর্ষণের ছবি সম্পাদনা করতে করতে বলেন, “যখন আপনি সেখানে যান তখন আপনি বার্মিজ সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণ এবং সবকিছুর মুখোমুখি হন।”
তিনি আরও বলেন, “যখন আপনি [বাস্তুচ্যুত মানুষদের] দেখেন এবং যখন তারা আপনাকে দেখে তখন তারাও খুব খুশি হয়কারণ তারা জানে যে কেউ বা কিছু লোকঅন্তত আছে যারা তাদের জন্য ভাবে।
এইচএসা মু মিয়ানমারের একটি জাতিগত গোষ্ঠীর নাগরিক সমাজ নেটওয়ার্ক কারেন পিস সাপোর্ট নেটওয়ার্কে জন্য কাজ করেন। মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের ৩০টি সংগঠন নিয়ে গঠিত এই নেটওয়ার্কটি ঐ অঞ্চলের বিভিন্ন সম্প্রদায়কে সহায়তা ও তথ্য সরবরাহ করে থাকে।
এইচসা মু-এর মতো মিয়ানমারের অনেক সাংবাদিকও প্রতিবেশী দেশগুলোতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেউ কেউ গ্রেপ্তার এড়ানোর চেষ্টা করছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, জান্তা সরকার সমালোচকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার জন্য আইন ব্যবহার করছে।
জান্তা সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইনও প্রস্তাব করছে যার মাধ্যমে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার বন্ধ করতেওপারে।
মিয়ানমারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অন্যান্য ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেয়ায় যারা তথ্যের নাগাল পেতে চায় ভিপিএনগুলো তাদেরকে বিকল্প ব্যবস্থার প্রস্তাব দিয়েছে।
অনেকেই খবর পাওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার উপর ভরসা করে এসেছেন। ২০-এর দশকের গোড়ার দিকে যখন মিয়ানমারে সামাজিক মাধ্যম উন্মুক্ত করা হয় তখন বেশ কয়েকটি স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম তাদের অঞ্চলের সংবাদ পোস্ট করার জন্য প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ফেসবুকের দিকে ঝুঁকে পড়ে।