শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোতে সমুদ্র থেকে ড্রেজিং করা ২৬৯ হেক্টর জমির উপর দুবাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বরূপ একটি আর্থিক কেন্দ্র হিসাবে একটি বিশাল বন্দর শহর নির্মাণ করা হচ্ছে। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এটি চীনের বিপুল অর্থায়নে পরিচালিত অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলির মধ্যে সাম্প্রতিকতম। এর মধ্যে রয়েছে একটি বন্দর এবং হাম্বানটোটায় একটি বিমানবন্দর।
যদিও এই প্রকল্পগুলি এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে কারণ শ্রীলংকায় নজিরবিহীন এক অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে তাদের জ্বালানী ও খাদ্যের জন্য অথবা বিদেশী ঋণ পরিশোধের জন্য কার্যত কোনও বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রকল্পগুলোকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছিল কিন্তু এতে খুব সামান্য ফলই পাওয়া গেছে।
কলম্বোর সেন্টার ফর পলিসি অল্টারনেটিভসের কর্মকর্তা ভবানী ফনসেকা স্কাইপের মাধ্যমে ভিওএকে বলেন, “উদাহরণস্বরূপ হাম্বানটোটার বিমানবন্দরটিকে বিশ্বের সবচেয়ে খালি বিমানবন্দর বলা হয় কারণ সত্যিই যেভাবে ব্যবসাকে আকর্ষণ করা উচিত ছিল সেভাবে এটি করতে পারেনি” ।
ফনসেকা বলেন, “একইভাবে হাম্বানটোটা বন্দরটিও খুব বেশি রাজস্ব আয় পেতে ব্যর্থ হয়েছে। সেখানে কাছাকাছি একটি কনভেনশন সেন্টার মূলত বন্ধই থাকে। "সুতরাং, এই ধরনের প্রকল্পগুলি শ্রীলংকার ক্রমবর্ধমান ঋণের জন্যেও দায়ী কিনা তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে ।”
শ্রীলংকার ৫ হাজার ১শ’ কোটি বৈদেশিক ঋণের প্রায় ১০ শতাংশ ঋণ রয়েছে চীনের কাছে। এমনকি এই বছর ব্যাপক আর্থিক সঙ্কট শুরু হওয়ার আগে দেশটি চীনা সংস্থাগুলির কিছু ঋণ পরিশোধের জন্য হিমশিম খাচ্ছিল।
শ্রীলংকা সরকার ২০১৭ সালে হাম্বানটোটা বন্দরটি একটি চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছে ৯৯ বছরের জন্য ইজারায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে তা হস্তান্তর করে। কারণ ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ তারা পরিশোধ করতে পারেনি। ঐ চুক্তির ফলে প্রতিবেশী দেশ ভারতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল যে বেইজিং ভারত মহাসাগরে একটি কৌশলগত স্থান নিশ্চিত করেছে।
গত ১৫ বছরে শ্রীলংকায় চীনের প্রভাব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে কারণ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার ভাই মাহিন্দা যিনি গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করেন , তাঁরা শ্রীলংকার রাজনীতিতে একটি প্রভাবশালী শক্তি হয়ে উঠেছিলেন।