মালাউইতে বসবাসকারী চীনের এক ব্যক্তির, আফ্রিকার শিশুদের নিয়ে বানানো বর্ণবৈষম্যমূলক কয়েকটি ভিডিও এই সপ্তাহে প্রকাশ পায়। এরপরই চীনের সরকার কূটনৈতিক পরিস্থিতির অব্যাহত অবনতি ঠেকাতে এবং আফ্রিকায় চীনের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে কাজ করে যাচ্ছে।
ভিডিওগুলোর বিষয়ে বিবিসি’র এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, লু কি নামে অভিযুক্ত এক ব্যক্তি আফ্রিকার শিশুদের ভিডিও করেন যেখানে আফ্রিকার শিশুরা নিজেদের অজান্তে ম্যান্ডারিন ভাষায় অপমানকর কথা বলছে, যেমন “আমি এক কালো দানব এবং আমার আইকিউ (বুদ্ধিমত্তা) কম।” এরপর ভিডিওগুলো চীনের এক ওয়েবসাইটে বিক্রি করা হয় বলে বিবিসি জানায়।
এমন খবরে মালাউইতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নেটিজেনরা টুইটারে তাদের ক্ষোভের কথা প্রকাশ করেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি টেমবো বলেন যে, তার দেশ “বিরক্তি, অসম্মান ও গভীর বেদনা” অনুভব করেছে।
২০২০ সালে ধারণ করা এই ভিডিওকে পুরনো খবর বলে শুরুতে মালাউতে অবস্থিত চীনের দূতাবাস ঘটনা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে, এমন নির্লিপ্ত প্রতিক্রিয়া জানানোর ফলে প্রাথমিকভাবে তারা সমালোচনার মুখে পড়ে। এরপরই তারা বৃহস্পতিবার এক নতুন, কড়া বিবৃতি প্রদান করেছে।
বিবৃতিতে দূতাবাস বলে, “মালাউইতে অবস্থিত চীনা সম্প্রদায় বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে।” তারা আরও বলে যে, “এক নির্বোধ ব্যক্তির বিচ্ছিন্ন এক ঘটনা পুরো অবস্থার পরিবর্তন করে দেয় না।”
এদিকে, ঐ অঞ্চলে চীনের সর্বোচ্চ কূটনীতিক, উ পেং নিজেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি মঙ্গলবার মালাউইতে যান। সেখানে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং টুইটারে লেখেন, “আফ্রিকার উষ্ণ হৃদ্যতা নিজে অনুভব করতে পেরে বেশ লাগছে। মালাউই সুন্দর মানুষদের এক সুন্দর দেশ।”
তার সফরের একদিন পরই মালাউইর পররাষ্ট্র মন্ত্রক টুইটারে চীনের এক নতুন শিক্ষাবৃত্তির খবর জানায়। এই শিক্ষাবৃত্তি ব্যবহার করে মালাউই’র মানুষজন চীনে স্নাতকোত্তর শিক্ষার সুযোগ নিতে পারবেন। তবে, অনলাইনে কিছু কিছু মানুষ সংশয় প্রকাশ করেছেন যে, এটি এই ঘটনা সামাল দেওয়ারই চীনের আরেকটি পন্থা।