ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা এই পাঁচটি দেশ যারা সমন্বিত ভাবে ব্রিক্স বলে পরিচিত তারা বেইজিং আয়োজিত ভার্চুয়াল শীর্ষ বৈঠকে বৃহস্পতিবার তাদের উদ্বোধনী বক্তব্য রেখেছে। ইউক্রেন নামটি তেমন ভাবে উল্লেখ করা হয়নি তবে পরোক্ষ ভাবে ইউক্রেনের প্রসঙ্গটি এসেছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাঁর ভাষণে বলেন িএই গোষ্ঠীটির উদ্দেশ্য হচ্ছে, “ এই পৃথিবীকে আরও স্থিতিশীল স্থান করে তোলা এবং, “ সমতা ও ন্যায় বিচারের কথা বলা”। তার পর তিনি পশ্চিমের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের নাম উচ্চারণ করা হয়নি।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমাদেরকে শীতল যুদ্ধের সময়কার মানসিকতা ও বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যকার সংঘাত পরিহার করতে হবে”। তিনি বাহ্যত মস্কোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “আমাদেরকে একতরফা নিষেধাজ্ঞা ও নিষেধাজ্ঞার অপব্যবহারের বিরোধীতা করতে হবে”।
ব্রিক্স হচ্ছে উদীয়মান অর্থনৈতিক জোট যারা নিজেদেরকে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন মুক্ত বিশ্বের বিকল্প হিসেবে দেখে। ব্রিক্স-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে এক মাত্র ব্রাজিল এ বছর আরও আগের দিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। চীন, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা ভোটদানে বিরত ছিল।
মূল শীর্ষ বৈঠকের আগে ব্রিক্স’এর ব্যবসায়িক ফোরামে শির মন্তব্য তেমন দ্ব্যর্থবোধক ছিল না।
তিনি বলেন, “ প্রধান উন্নত রাষ্ট্রগুলিকে দায়িত্বশীল অর্থনৈতিক নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে এবং এমন সব নেতিবাচক নীতি পরিহার করতে হবে যা উন্নয়নশীল দেশগুলির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করতে পারে। বার বার এটা প্রমাণিত হয়েছে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফল হয়েছে হিতে-বিপরীত”।
অন্যরা উল্লেখ না করলেও শি সরাসরি ইউক্রেনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “ কভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেন সংকটের যৌথ প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বের শিল্প ও সরবরাহ ধারাবাহিকতায় বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে এবং উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আঘাত সহ্য করতে হচ্ছে।
ও দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার শি ও “আমাদের সকল চীনা বন্ধুকে” ধন্যবাদ জানান এবং “কোন কোন রাষ্ট্রের স্বার্থপর কর্মকান্ডের” সমালোচনা করে এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে বলেন তারা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে সংকরে মুখে ফেলেছে।
এ দিকে ব্রিক্স’এর যৌথ ঘোষণাটি ছিল অস্পষ্ট যেখানে এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়। ঐ বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি এবং আমাদের জাতীয় অবস্থানগুলো যা যথার্থ স্থানে যেমন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আমরা তুলে ধরেছি সেটাই স্মরণ করা যেতে পারে। আমরা রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনা হোক সেটা সম্থন করি”। বিবৃতিতে আরও বলা হয় যে ঐ অঞ্চলে জাতিসংঘের মানবিক সহযোগীতাকে ব্রিক্স সমর্থন করেছে।
আলোচনার সবটুকুতেই ইউক্রেনের প্রতি আলোকপাত করা হয়নি।শি এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কভিড-১৯ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করার উপর জোর দেন।