অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রিপোর্ট: স্বাধীন ভাবে তথ্য প্রকাশ করতে পারে বিশ্বের মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ


ফাইল ছবি, কেনিয়াতে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম দিবস উপলক্ষ্যে মিছিল মে ৩, ২০১৮ .
ফাইল ছবি, কেনিয়াতে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম দিবস উপলক্ষ্যে মিছিল মে ৩, ২০১৮ .

ব্রিটেন ভিত্তিক একটি গ্রুপ জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার নিয়ে তাদের সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে বিশ্বের মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ এমন স্থানে বসবাস করে যেখানে মানুষ অবাধে তথ্য পেতে বা তা একে অপরের সঙ্গে আদানপ্রদান করতে পারে।

একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গ্লোবাল এক্সপ্রেশন রিপোর্ট আর্টিকেল নাইন্টিন ২০২২ সালের তাদের প্রতিবেদনে বলেছে যে চীন, মিয়ানমার এবং রাশিয়ার মতো কর্তৃত্ববাদী দেশগুলিতে এবং ব্রাজিল ও ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার ৮০% ‘র এক দশক আগের তুলনায় কম মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে।

ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছ, কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠি ও শাসকরা তাদের জনগণ যা দেখেন, শোনেন কিংবা বলেন তার উপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেই চলেছে।

প্রতিবেদনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কথা উল্লেখ করা হয় তবে লক্ষ লক্ষ মানুষের “পরিচয়, তথ্য ও মতামতের ওপর কর্তৃত্ব আরোপের ক্ষেত্রে” চীন সরকারের অবস্থান সবচেয়ে চরম অবস্থায় রয়েছে।

বার্ষিক এই প্রতিবেদনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা পরীক্ষা করার জন্য ১৬১টি দেশে ২৫টি করে সূচক ব্যবহার করে দেখা হয়েছে প্রতিটি ব্যক্তি হয়রানি, আইনী প্রতিক্রিয়া বা সহিংসতার ভয় ছাড়াই সমাজে মত প্রকাশ, যোগাযোগ এবং অংশগ্রহণের জন্য কতটা স্বাধীন। প্রতিটি দেশের জন্য শূন্য থেকে ১০০ পর্যন্ত স্কোর তৈরি করা হয়।

এই বছর, রিপোর্ট অনুযায়ী ডেনমার্ক এবং সুইজারল্যান্ডের অবস্থান বিশ্বের মাঝে শীর্ষে। প্রতিটি সূচকে তাদের স্থান ছিল ৯৬। নরওয়ে ও সুইডেনের স্কোর ৯৪, এস্টোনিয়া ও ফিনল্যান্ডের স্কোর ৯৩। গবেষণায় দেখা গিয়েছে সবার শীর্ষে রয়েছে ইউরোপের দেশ ১০টি রয়েছে সবার শীর্ষ।

আর্টিকেল নাইন্টিনে উত্তর কোরিয়াকে বিশ্বের সবচেয়ে দমন-পীড়ন মূলক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং যার স্থান একেবারে শূন্যে। ইরিত্রিয়া, সিরিয়া ও তুর্কমেনিস্তানের স্কোর ছিল এক এবং বেলারুশ, চীন ও কিউবার স্কোর ছিল দুই।

এই স্কেলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৩০তম। ২০১১ সালে সারা বিশ্বের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ছিল নবম। যুক্তরাষ্ট্রের স্কোরের এবার নয়-পয়েন্ট কমে গিয়েছে। তাতে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নেমে এসেছে।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে গত দুই দশকে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে অনেক বেশি পরিবর্তন ঘটেছে। এর মধ্যে বেশকিছু দেশে ক্ষমতা দখল বা অভ্যুত্থানের ফলে ঘটে তবে অন্যান্য অনেক দেশেই প্রায়শই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতাদের অধীনে অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে দেখা গেছে।

প্রতিবেদনের নাম আর্টিকেল নাইন্টিন নেওয়া হয়েছে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা থেকে। সেখানে বলা হয়েছে, "প্রত্যেকেরই মতামত এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে; এই অধিকারগুলির মধ্যে রয়েছে, হস্তক্ষেপ ছাড়াই মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং যে কোনও সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে এবং দেশের সীমান্ত নির্বিশেষে তথ্য পাওয়ার এবং সন্ধানের, গ্রহণ করার এবং সরবরাহ করার স্বাধীনতা থাকবে।

XS
SM
MD
LG