অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সিরিয়ায় মানবিক চাহিদা বেড়েছে  চলমান যুদ্ধে 


৩০শে জানুয়ারী ২০২২ সালে সিরিয়ার দামেস্কে অভাবী মানুষদের জন্য মানবিক সহায়তা বিতরণের জন্য ব্যাগ বহনকারী একটি দাতব্য সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক।
৩০শে জানুয়ারী ২০২২ সালে সিরিয়ার দামেস্কে অভাবী মানুষদের জন্য মানবিক সহায়তা বিতরণের জন্য ব্যাগ বহনকারী একটি দাতব্য সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক।

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সিরিয়ায় যুদ্ধ চলার কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ তীব্র বুভুক্ষার সম্মুখীন হচ্ছে এবং প্রায় এক কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। সিরিয়ার ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারির সর্বসাম্প্রতিক প্রতিবেদনটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে জমা দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মনোযোগ ইউক্রেনের যুদ্ধের দিকে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় গত ১২ বছর ধরে সিরিয়ায় যে যুদ্ধ চলছে তা সকলেই যেন ভুলে গেছে। তবে মনোযোগ ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়া সত্ত্বেও সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, এবং জীবনরক্ষাকারী সহায়তা থেকে বঞ্চিত বেসামরিক নাগরিকদের হতাশা অব্যাহত রয়েছে।ে

জাতিসংঘ কমিশন জানিয়েছে, সিরিয়ার অর্থনীতি এখন দ্রুত অধোগতির দিকে ধাবিত এবং সিরিয়াজুড়ে মানবিক চাহিদা এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান পাওলো পিনহেইরো বলেছেন, আনুমানিক এক কোটি ৪৬ লক্ষ সিরিয়ান মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

পিনহেইরো বলেন, "এই ভয়ঙ্কর বাস্তবতা বিবেচনা করে, এটি অযৌক্তিক যে নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়াব্যাপী এবং প্রতিটি যথার্থ পথে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছানোর উপায় কিভাবে প্রসারিত করা যায় তার পরিবর্তে যে একটি মাত্র অবশিষ্ট অনুমোদিত সীমান্ত পারাপার আছে তা বন্ধ করা যায় কিনা তার প্রতি তাদের আলোচনা কেন্দ্রীভূত থেকেছে।

সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ আগামী সপ্তাহে ত্রাণ বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আর এমন সময় নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ায় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকা ইদলিবে তুরস্কের বাব আল-হাওয়া থেকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখা হবে কি না তা নিয়ে ভোটাভুটি করবে। রাশিয়া এই করিডোর দিয়ে পুনরায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে ভেটো দেওয়ার হুমকি দিয়েছে বলে জানা গেছে।

এতে বলা হয়, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে সরকারপন্থী শক্তি ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। মানুষ হত্যা ও আঘাত করা, বাড়িঘর ধ্বংস ও ক্ষতি করা অব্যাহত রয়েছে। এতে বলা হয়, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলেও একই ধরনের ঘটনা ঘটছে।

কমিশনের চেয়ারম্যান পিনহেইরো বলেছেন, এই যুদ্ধ লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য অবর্ণনীয় দুর্দশা ও দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। এরই মাঝে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের হাজার হাজার শিশুও রয়েছে যাদের ভাগ্য এখনও অনিশ্চিত।

তিনি বলেন, “আমাদের এই সংস্থাটিকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার আল হোল ও আল রোজ ক্যাম্পগুলোতে ৪০ হাজার শিশু এবং ২০ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক বিশেষ করে নারীরা এখনও ভয়াবহ অবস্থার মাঝে রয়েছে। পিনহেইরো বলেন, আল হোলের নিরাপত্তাহীনতা এখন যেন একটা সাধারণ বিষয় হয়ে গেছে , এই বছর কমপক্ষে ২৪টি খুনের খবর পাওয়া গেছে।”

জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত সিরিয়ার রাষ্ট্রদূত হুসাম এডিন আলা, কমিশনের এই রিপোর্টি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে এটা মিথ্যা অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিচালিত হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর কথায়, বানোয়াট অভিযোগ, বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এবং মিথ্যা রিপোর্টের ভিত্তিতে উদ্বাস্তুদের দুর্ভোগনিরসনে কোন রাজনৈতিক সমাধান বা প্রতিকার করা যাবে না।

XS
SM
MD
LG