ইকুয়েডরে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভের অবসান ঘটাতে দেশটির সরকার ও আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর নেতারা বৃহস্পতিবার এক সমঝোতায় পৌঁছায়। দেশটির প্রেসিডেন্ট গুইলারমো ল্যাসো’র সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে ঐ বিক্ষোভ হচ্ছিল। বিক্ষোভে অন্তত আটজন নিহত হন বলে, আদিবাসী নেতারা জানান।
১৩ জুন ইকুয়েডর জুড়ে আদিবাসী সংগঠন সিওএনএআইই কর্তৃক আয়োজিত বিক্ষোভ আরম্ভ হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল জ্বালানীর মূল্যহ্রাস এবং খনি ও জ্বালানী তেল শিল্পের আরও প্রসার সীমাবদ্ধ করা।
বিক্ষোভের ফলে খাদ্য ও ওষুধেরও সংকট দেখা দেয়। এছাড়াও জ্বালানী তেল শিল্পও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই শিল্পই ইকুয়েডরের আয়ের প্রধান উৎস। জ্বালানী মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভের ফলে দেশটির ২১ কোটি ৩০ লক্ষ ডলারের ক্ষতি হয়।
সমঝোতার অংশ হিসেবে, সরকার আবারও জ্বালানী তেলের মূল্যহ্রাসে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত গ্যাসোলিন ও ডিজেলে অতিরিক্ত আরও ৫ সেন্ট মূল্যহ্রাস করা হয়। এর আগে প্রতি গ্যালনে ১০ সেন্ট মূল্যহ্রাস করা হয়েছিল।
এই দুই জ্বালানীতে মোট ১৫ সেন্ট মূল্যহ্রাসের ফলে দেশটির প্রতিবছর ৩৪ কোটি ডলার ব্যয় হবে বলে, অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে।
এছাড়াও জ্বালানী তেলের প্রকল্পগুলোর জন্য জারি করা এক আদেশ প্রত্যাহার ও খনি শিল্পের জন্য একইরকম আরেকটি আদেশও সংশোধনের প্রস্তাব করেন ল্যাসো। এমন সংশোধনের ফলে এই ধরণের উন্নয়ন পরিকল্পনায় স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে পরামর্শ করার বিষয়টি নিশ্চিত হবে।
ইকুয়েডরের জাতীয় সংসদের সাথে ল্যাসোর বৈরি সম্পর্কটির, বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে আরও অবনতি হয়েছিল। এই সপ্তাহের শুরুর দিকে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা ল্যাসোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ভোটের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তবে, সেই যাত্রায় অল্পের জন্য বেঁচে যান ল্যাসো।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন যে, বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশ সহিংস আচরণ করেছে। অপরদিকে, নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হওয়ার খবর জানায় সরকার। ইকুয়েডরের বৃহত্তম তেলক্ষেত্রে জ্বালানী বহনকারী একটি বহরে হওয়া হামলায় এক সৈন্য নিহতও হয়।