অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

তারকাদের ঈদ ভাবনা


তারকাদের ঈদ ভাবনা
তারকাদের ঈদ ভাবনা

এলো ঈদ। ঈদে বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গন বেশ সচকিত হয়ে ওঠে। তারকারা ব্যস্ত থাকেন বিনোদনের অনুষ্ঠান নির্মাণ নিয়ে। টেলিভিশনে সপ্তাহব্যাপী চলে ঈদ অনুষ্ঠান, চলে নাটক, গান ও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। সাধারণ মানুষ ঈদ উদযাপনে যেমন ব্যস্ত থাকে, তেমনই টেলিভিশন বা যে কোনো পর্দায় চোখ রাখেন। কিছু মানুষের মনে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটে, তারকারা ঈদে কী করেন? এসব কথাই ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানাচ্ছেন বাংলাদেশের শোবিজের পাঁচ তারকা।

শবনম ফারিয়া

বিজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে দেশের শোবিজে পা রাখেন শবনম ফারিয়া। ২০১৩ সালে 'অল টাইম দৌড়ের উপর' নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয়শিল্পীর তকমা নামের সঙ্গে যুক্ত করেন। ২০১৮ সালে 'দেবী' সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে শবনম ফারিয়ার। এই চলচ্চিত্রে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে বাচসাস পুরস্কার এবং শ্রেষ্ঠ নবীন অভিনয়শিল্পী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন।

শবনম ফারিয়া
শবনম ফারিয়া

অসুস্থতার কারণে, এবারের ঈদে কোনো নাটকে অভিনয় করেনি ফারিয়া। তবে পূর্বে অভিনীত কয়েকটি নাটক প্রচারে যেতে পারে বলেন জানালেন এই অভিনেত্রী। এছাড়া, সম্ভবত 'হোটেল নিরিবিলি' নামের একটি ওয়েব সিরিজ প্রচার হতে পারে। শবনম ফারিয়ার ঈদ বেশ বৈচিত্রময়। বাবার চিকিৎসক, তার পেশার সূত্রে জন্ম সুনামগঞ্জে।

ভয়েস অফ আমেরিকাকে ফারিয়া বলেন, “সুনামগঞ্জে ছোটবেলার অনেকগুলো ঈদ কেটেছে। আমার শৈশবের ঈদগুলো বলতে পারেন কোয়ার্টারে কেটেছে। সেখানের একটা অন্যরকম বিষয় রয়েছে। ডিসি আঙ্কেলের মেয়ে বা পুলিশ অফিসার আঙ্কেলের মেয়েদের সঙ্গে কেটেছে, মানে কোয়ার্টারে যারা থাকতেন তাদের ছেলে মেয়েদের সঙ্গে ঈদের দিন ঘুরে বেড়াতাম। বাবার বদলির চাকরি, যার ফলে বন্ধু বান্ধব কিছুদিন পরপর বদল হতো। আর সেভাবেই ঈদ করতাম। ছোটবেলার ঈদগুলো ছিল দায়িত্বমুক্ত, স্বাধীন। আর বড়বেলার ঈদগুলো অনেক দায়িত্বপূর্ণ। আগে অনেক গিফট পেতাম। এখন আমাদের গিফট দিতে হয়।”

এবারের ঈদ একটু অন্যরকম কাটবে জানিয়ে শবনম ফারিয়া বলেন, “এবার আমার বোড় বোন নয়াদিল্লি থেকে এসেছেন। বোন ও তাদের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে বেশ হুল্লোর করেই কাটবে। সারাদিন অবশ্য মাংস কাটাকাটির বিষয়টি রয়েছে। আমরা গরু কোরবানি দেই। শান্তি নগরের বাসায় কোরবানি দেব। তারপর সেসব নিয়ে ব্যস্ত থেকেইতো ঈদ শেষ হয়ে যাবে। তারপর বোন ও বোনের মেয়েদের নিয়ে ঘুরতে বের হবো। ঢাকায় আমাদের প্রচুর আত্মীয়। আসলে প্রতিবারই ঈদ আত্মীয় স্বজনের বাসায় ঘুরতে ঘুরতে শেষ হয়ে যায়।”

সিয়াম আহমেদ

এই সময়ের ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম আলোচিত অভিনেতার নাম সিয়াম আহমেদ। প্রথমবারের মতো কলকাতার সিনেমায় অভিনয় করছেন বাংলাদেশের সিয়াম আহমেদ। সহশিল্পী প্রসেনজিৎ, শ্রাবন্তী ও আয়ুষী তালুকদার। সিনেমার গল্পভাবনাও সিয়ামের। সিয়াম ২০১২ সাল থেকে টেলিভিশনে নাটক, বিজ্ঞাপন, উপস্থাপনা করছেন। রবির জন্য একটি বিজ্ঞাপনে মডেলিংয়ের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ইতোমধ্যেই সিয়ামের ঝুলিতে এসেছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ তিনটি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার।

পরিবারের সাথে সিয়াম আহমেদ
পরিবারের সাথে সিয়াম আহমেদ

২০১৮ সালে প্রণয়ধর্মী পোড়ামন-২ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্র অভিষেক হয়। বিশ্বসুন্দরী চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

গত ঈদে সিয়াম ও পূজা অভিনীত ‘শান’ সিনেমাটি বেশ ভালো ব্যবসা করে। সংশ্লিষ্টদের মতে, ব্যাপকভাবে সিনেমা হলে দর্শক ফেরায় এই ছবিটি। সিনেপ্লেক্সগুলোতে ভালো ব্যবসা করেছে শান। তবে, এবারের ঈদে সিয়ামের কোনো সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে না। তাই, অলস সময়টা এবার পুরোটাই পরিবারকে দিচ্ছেন। সিয়াম ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “ঈদে আসলে ব্যস্ত থাকা হয়। গত ঈদে একফোঁটা সময় পাইনি, তবে এবারের ঈদে আমি পরিবারকে সময় দিতে পারছি। বিশেষ করে আমার বাচ্চাকে।”

সিয়াম ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভালোবেসে বিয়ে করেন শাম্মা রুশাফি অবন্তীকে এবং চলতি বছরের এপ্রিলে পুত্র সন্তানের বাবা হন। এবারের ঈদের আগে কাজ করেছেন টেলিভিশনের কিছু সাক্ষাৎকার ও ঈদের অনুষ্ঠানমালায়। যার ফলে, অনেকটা সময় পেয়েছেন। এই সময়টায় করেছেন শপিং। সিয়াম বলেন, “আসলে কোরবানি ঈদের বিষয়টা একদম অন্যরকম। পুরো সময়টা যায় কোরবানিকে কেন্দ্র করে। সকালে বাবার সঙ্গে নামাজ পড়তে যাই। তারপর বাসায় এসে কাটাকুটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেতে হয়। এরপর চলে মাংস বিতরণ। বাসায় থেকেই টেলিভিশন দেখা, খাওয়া দাওয়া, এ ভাবেই কোরবানির ঈদ শেষ হয়ে যায়।এবার তো আমার ছেলে আছে। তাকে আলাদাভাবে সময় দিতে হবে। খেলা করতে হবে তার সঙ্গে। নাহলে তো ঈদই হবে না।”

সিয়ামের কাছে শৈশবের ঈদটা বেশ মজার ছিল। এত দায়িত্ব ছিল না, দায়িত্বহীন সময়টাই ভাল ছিল বলে মনে করেন তিনি। সিয়াম বলেন, “ছোটবেলার কোরবানি ঈদগুলোর রুটিনও এমনই ছিল আমার। তবে, সে সময় বেড়ানোর অনেক সুযোগ ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতাম। ঈদের পরেরদিন সিনেমা দেখতে যেতাম। এখনও বেড়ানো হবে। হয়তো ঈদের পরেরদিন আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে যাবো। ঈদের দিন কোথাও বের হওয়া সম্ভব না।”

সাবিলা নূর

সাবিলা নূর বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন টেলিভিশন অভিনেত্রী ও মডেল। সাবিলা নূর বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে নাচ শিখে পদ্ম কুঁড়ি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। সেসময় তিনি প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। সাবিলা ২০১৪ সাল থেকে মডেলিং-এর মাধ্যমে অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন। তার জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রামীণফোন, নেসক্যাফে, প্রাণ ফিট ইত্যাদি। এছাড়াও এই সময়ের আলোচিত ধারাবাহিক নাটক ব্যাচেলর পয়েন্টে তিনি নাবিলা হিসেবে পরিচিত। প্রতি ঈদে সাবিলা নূর অভিনীত একাধিক নাটক বিভিন্ন টেলিভিশনে দেখা যায়। এবারের ঈদে তাঁর অভিনীত ১৬ টি নাটক বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত হবে। ভয়েস অফ আমেরিকাকে এমনটাই জানালেন তিনি।

সাবিলা নূর
সাবিলা নূর

ঈদের আগে সাবিলা নূর ক্যামেরার সামনে এতোটাই ব্যস্ত থাকেন যে, ঈদের দিনে তিনি ঘুম ছাড়া একবিন্দু অন্য কাজ করতে পারেন না। এবারের ঈদেও একই রুটিন পালন হতে পারে বলে জানালেন তিনি। বললেন, “আসলে ঈদের মধ্যরাত পর্যন্ত শুটিং করি। যার ফলে ঈদের দিনটা ঘুম ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারি না। ঘুরতে বের হই ঈদের পরেরদিন থেকে।”

শৈশবের ঈদগুলোই বেশি আনন্দের ছিল সেইসব দিনগুলোকে এখন মিস করেন। বড় হয়ে ঈদ সেলিব্রেশন বিষয়টাই জীবন থেকে হারিয়ে গেছে যার জন্য অনেক আফসোস কাজ করে তার। সাবিলা বলেন, “আমার ছোটবেলা কেটেছে চট্টগ্রামে। ঐ সময়ের ঈদগুলো ছিল দারুণ আনন্দের। ঈদের আগের রাতে আমরা বন্ধুরা মিলে দারুণ আনন্দ করতাম। ঈদের দিন নতুন জামা কাপড় পরে বড়দের কাছে সালামি নিতাম। খুবই মজার ছিল সেসব দিন। এখন আর তেমন নেই ঈদের আনন্দ। ঈদ বলতেই কিন্তু ঈদের আগের সময়টাকে উপভোগ করা। যেমন ঈদের কেনাকাটা, শপিং করা, হাতে মেহেদি দেওয়াটা দারুণ আনন্দের একটা বিষয়। অথচ ঈদের আগেরদিন মধ্যরাত পর্যন্ত ক্যামেরার সামনেই থাকতে হয়। শপিং করার আনন্দটা নেই। যার ফলে সেলিব্রেশনটা হয় না।”

ঈদে উপহার পান। তবে, এবার কোনো উপহারই পাননি বলে জানালেন এই অভিনেত্রী। বললেন, “গত ঈদে নিজ থেকে কিছু কেনা হয়নি। আমার হাজবেন্ড আমাকে জামা, অলঙ্কার কিনে দিয়েছে। সেসব দিয়ে ঈদ করেছি। তাঁর উপহার দেওয়াটাও আমার জন্য আনন্দের।এবার তার কাছ থেকে এখনও উপহার পাইনি।”

নিরব

র‌্যাম্প মডেল থেকে টিভি নাটকে অভিনয় শুরু করেন নিরব। সেখান থেকেই অভিষিক্ত হন চলচ্চিত্রে। ২০০৯ সালে পরিচালক শাহীন-সুমনের ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’ চলচ্চিত্র দিয়ে সিনেমা জীবন শুরু করেন। মডেল হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হন নিরব। বাংলালিংক দেশ বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পরিচিতি পেয়ে যান নিরব। বলিউডের চলচ্চিত্রেও কাজ করার সুযোগ পান তিনি। ২০১৭ সালে সমীর খান পরিচালিত “শয়তান” নামের চলচ্চিত্রে অভিনয় নিরবের ক্যারিয়ারে ভিন্নমাত্রা যোগ করে। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক চলচ্চিত্রে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। গত সপ্তাহে ‘অমানুষ’ নামের একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়, যেখানে নিরবের সঙ্গে অভিনয় করেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। বর্তমানে বেশকিছু চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। ঈদের ঠিক তিন দিন আগে ‘ফিরে দেখা’ নামের একটি চলচ্চিত্র সেন্সর পেয়েছে।

নিরব
নিরব

কোরবানি ঈদ নিরবের বেশ ব্যস্ততার সঙ্গেই কাটে। পরিবারের ছোট সন্তান হওয়ায়, কোরবানির সমস্ত দায়িত্বটা তার ওপর এসে পড়ে। নিরব বলেন, “ঈদের আগে শুটিংয়ের নানা কাজ থাকলেও ঈদের দিনটা কোরবানি নিয়ে ব্যস্ত থাকি। যেহেতু আমি পরিবারের ছোট ছেলে, তাই আমার ওপর দায়িত্ব এসে পড়ে। এই ঈদের পুরো সময়টা কেটে যায় মাংস কাটাকাটি ও বিতরণ নিয়ে। সন্ধ্যার পরও দেখা যায় কাজ থাকে। তাই ঈদের দিন আসলে ঘোরাঘুরির সুযোগ হয় না। যতটুকু সুযোগ হয়, স্ত্রী ও বাচ্চাদের নিয়ে বের হই। না হলে, পরের দিন ঘোরার পরিকল্পনা করি। এছাড়া, এলাকায় বন্ধ্যুবান্ধব রয়েছে, হয়তো তাদের সঙ্গে কিছুটা আড্ডা দেই। কোরবানি ঈদের আর কোনো সুযোগই থাকে না।”

নিরব মনে করেন ছোটবেলার ঈদগুলোই বেশ মজার ছিল। বললেন, “আসলে ছোটবেলায় অনেক মজা করতাম। ঈদের নামজ পড়তে যেতাম বাবা ও ভাইদের সঙ্গে। নামাজ শেষে, বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়তাম। কোনো ঠিক ছিল না। কখন কোথায় যাব না যাব। আবার কখনও সিনেমা হলে চলে যেতাম। এভাবে ছোটবেলার ঈদগুলো কেটেছে। আর, বড়বেলায় এসে আমার এখন দুই মেয়েকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাদের মধ্যেই আমার শৈশবকে খুঁজে পাই।”

প্রার্থনা ফারদীন দীঘি

প্রার্থনা ফারদীন দীঘি গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপন করে তুমুল আলোচনায় আসেন। শিশু মডেল হিসেবে করা ঐ বিজ্ঞাপনের সংলাপ, “মা আমাদের একটা ময়না পাখি আছে না...” মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে দীঘি শিশুশিল্পী হিসেবে একাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘কাবুলিওয়ালা’ দীঘি অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেই ২০০৬ সালে শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন দীঘি। পরে আরও দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কারণে শ্রেষ্ঠ শিশু চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত “তুমি আছ তুমি নেই” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চিত্রনায়িকা হিসেবে হাজির হন। অভিনয় করেছেন ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’ নামের আরেকটি চলচ্চিত্রে। এছাড়াও, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক “মুজিব” চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন; যেটি এখন মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিনেমা 'শেষ চিঠি'তে অভিনয় করে দর্শকদের নজর করেছেন। একইসঙ্গে ফটোশুট ও মডেলিং করে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

প্রার্থনা ফারদীন দীঘি
প্রার্থনা ফারদীন দীঘি

দীঘির বাবা সুব্রত ও মা দোয়েল। মা প্রয়াত হয়েছেন। তাই সংসারটা আগলে রাখেন দীঘি নিজেই। স্বাভাবিকভাবেই ঈদে দীঘির ব্যস্ততা থাকে পরিবার নিয়ে। তবে কোরবানি ঈদ দীঘির কাছে বৈচিত্রময়। কেননা কোরবানির পশু কিনে আনার পর, দেখাশোনার দায়িত্বটাও পালন করেন তিনি। গ্যারেজে রাখা গরুকে তিনি নিজ হাতে খাওয়ান। তবে, কোরবানির দিন খুব কষ্টও হয় তাঁর। দীঘি বলেন, “আমাদের কোরবানির গরু কিনে এনে গ্যারেজে রাখা হয়। আমি দেখাশোনা করার চেষ্টা করি, খাবার দেই। মায়া পড়ে যায় প্রাণীটার প্রতি। তাই কোরবানির দিন একটু কষ্ট হয়।”

ঈদের দিন বাসাতেই থাকেন। বাসার কাজ কর্ম করেন, বাবার দেখাশোনাটাও দীঘি করেন। বললেন, “ঈদে বাসার অনেক কাজ আমাকে করতে হয়। কোরবানি ঈদ এলে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। কারণ যারা মাংস নিতে আসে, তাদের বিতরণের কাজটা আমিই করি। এসব করতে করতেই রাত হয়ে যায়। তাই ঈদের দিন ঘোরাঘুরির সময়টা থাকে না। তবে সুযোগ পেলে টেলিভিশন দেখি।”

বড় হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ব অনেকটাই বেড়েছে দীঘির। বললেন, “আসলে যখন ছোট ছিলাম, মা জামা কাপড় পরিয়ে দিতেন। বাবার সঙ্গে ঘুরতে যেতাম। আরেকটু যখন বড় হলাম, তখন বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া, খাওয়া দাওয়া, আড্ডা দেওয়া এসব শুরু হলো। এখনও বন্ধু বান্ধব রয়েছে। হয়তো এবার ঈদেও বা ঈদের পরেরদিন বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হবো। আত্মীয় স্বজন রয়েছে, তাদের বাসায় যাব। আমাদের বাসাতেও গেস্ট আসবে। সেসব আমাকেই দেখতে হবে।”

দীঘি ঈদে অনেক উপহার পান। কোরবানি ঈদে সেসব কমই থাকে। দীঘি বললেন, "ঈদে বাবা আমাকে জামা কাপড় কিনে দেন, অর্নামেন্টস কিনে দেন। মামা আমাকে গিফট দেন। ঈদে অনেক উপহার পাই। ঈদের আনন্দটা এই প্রাপ্তির মধ্যেও অনেকটা থাকে।”

XS
SM
MD
LG