অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ব্রিটিশ সেনাদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ


ফা্ইল ফটো, ব্রিটিশ বাহিনীর ফরোয়ার্ড অপারেটিং বেস স্টারগা দ্বিতীয় থেকে গত ১৩ই ডিসেম্বর ২০১৩ সালে দেখা যায়, দক্ষিণ আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে আফগানরা একটি নদীর উপর একটি বাঁধ মেরামত করার চেষ্টা করছে।
ফা্ইল ফটো, ব্রিটিশ বাহিনীর ফরোয়ার্ড অপারেটিং বেস স্টারগা দ্বিতীয় থেকে গত ১৩ই ডিসেম্বর ২০১৩ সালে দেখা যায়, দক্ষিণ আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে আফগানরা একটি নদীর উপর একটি বাঁধ মেরামত করার চেষ্টা করছে।

সদ্য প্রাপ্ত এক সামরিক নথির বরাত দিয়ে বিবিসির এক তদন্তে এক দশক আগে আফগানিস্তানে বিদ্রোহ-বিরোধী অভিযানের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল এয়ার সার্ভিসের (এসএএস) একটি ইউনিটের বিরুদ্ধে সন্দেহজনক ভাবে আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হেলমান্দে ৫৪ জনকে অবৈধভাবে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। জরুরি ভিত্তিতে এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।

এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ব্রিটেনের এই বিশেষ বাহিনীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে 'কার্যকর ও স্বচ্ছ' তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

২০১০ ও ২০১১ সালের মধ্যে সংঘঠিত যুদ্ধাপরাধের এই অভিযোগ সেই সময়কার যখন ব্রিটিশ সৈন্যরা আফগানিস্তানে মিত্রবাহিনীর সঙ্গে তালিবান বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তখনও লড়াই করছিল।

ঐ প্রতিবেদনে বলা হয় রাত্রিকালীন অভিযানের সময়ে এসএএস সৈন্যরা “ঠান্ডা মাথায়” নিরস্ত্র আফগানদের নিয়মিত গুলি করে হত্যা করতো। এই সব অপরাধকে যৌক্তিকতা দেয়ার জন্য তারা সেখানে অস্ত্র পুঁতে রাখতো।

এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যশানাল , ব্রিটেনের এই বিশেষ বাহিনীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের “প্রয়োগসাধ্য ও স্বচ্ছ” তদন্তের আহ্বান জানায়।

এদিকে এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায়, বর্তমানে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া আফগানিস্তান স্বাধীন মানবাধিকার কমিশনের (এআইএইচআরসি) প্রাক্তন প্রধান শাহারজাদ আকবর কয়েক দশক ধরে তার দেশে আন্তজার্তিক শক্তিগুলোর দ্বারা ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে বলে সম্প্রতি এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, "স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ক্ষতিপূরণের জন্য এখনও দেরি হয়ে যায়নি।"

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর বিষয়ে দুটি স্বাধীন তদন্ত হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার মতো পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

প্রমাণ ছাড়া এধরনের অভিযোগ তাদের সাহসী সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীদের সুনাম ক্ষুন্ন করছে বলেও তারা মন্তব্য করে।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে এই প্রতিবেদনটি “এমন সব অভিযোগ সম্পর্কে অযৌক্তিক উপসংহারে পৌঁছাচ্ছে যা এরই মধ্যে সম্পূর্ণ ভাবে তদন্ত করা হয়েছে”। এতে বলা হয় আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সৈন্যদের আচরণের ব্যাপারে দুটি তদন্ত করা হয়েছে কিন্তু এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার মতো যথেষ্ট প্রমাণ কোন তদন্তেই পাওয়া যায়নি।

২০০১ সালের ১১ ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের উপর হামলার পর নেটো -নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসাবে আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। তদন্তে ২০১০ সালের শেষের দিকে হেলমান্দে তালেবান কমান্ডারদের আটক করতে এবং বোমা তৈরির নেটওয়ার্ক ব্যাহত করতেই ছয়মাস ধরে 'হত্যা বা আটক' অভিযান চালিয়েছে এই ইউনিটটি।

বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতা জন হিলি অভিযোগকে 'প্রচন্ড বিরক্তিকর' হিসেবে বর্ণনা করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসকে এই দাবিগুলি যাচাই করার জন্য কী পদক্ষেপ নেবেন তা সংসদে ব্যাখ্যা করার জন্য অনুরোধ করেছেন।

গত ১৫ই আগষ্ট তালেবান বিদ্রোহীরা দেশটির নিয়ন্ত্রণ পুনরায় দখল করার কয়েক দিন আগে গত আগস্টে চূড়ান্তভাবে ব্রিটিশ বাহিনী ও তাদের নেটো মিত্ররা আফগানিস্তান থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।



XS
SM
MD
LG