অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

চীনের প্রত্যাশা, তাড়াতাড়িই শেষ হবে মহাকাশ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ


Iসিনহুয়া নিউজ এজেন্সির প্রকাশিত এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, চীনের শেনঝাউ ১৪ মহাকাশযান বহনকারী লং মার্চ-২এফ ক্যারিয়ার রকেটটি উত্তর-পশ্চিম চীনের জিউকোয়ানের জিউকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টারের লঞ্চ প্যাড থেকে উড্ডয়ন শুরু করেছে।
Iসিনহুয়া নিউজ এজেন্সির প্রকাশিত এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, চীনের শেনঝাউ ১৪ মহাকাশযান বহনকারী লং মার্চ-২এফ ক্যারিয়ার রকেটটি উত্তর-পশ্চিম চীনের জিউকোয়ানের জিউকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টারের লঞ্চ প্যাড থেকে উড্ডয়ন শুরু করেছে।

চীনের সরকারি গনমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তাইকোনট নামে পরিচিত চীনা নভোচারীরা এবং একটি গ্রাউন্ড ক্রু নভোচারী দল এ বছরের শেষ দিকে দেশের প্রথম স্থায়ী কক্ষপথের মহাকাশ কেন্দ্র এবং সারা বিশ্বে দ্বিতীয় স্পেস স্টেশনটি সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মাইলফলকটি চীনের জাতীয় গুরুত্ব বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগের সাথে সাথে সামরিক বাহিনীর জন্য একটি সম্ভাব্য নতুন হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।

আটলান্টিক কাউন্সিলের এশিয়া সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভের সিনিয়র ফেলো এবং " দ্য মিথ অফ চাইনিজ ক্যাপিটালিজম” এর লেখক ডেক্সটার রবার্টস বলেন,

২০৪৯ সালের মধ্যে, 'অর্থনীতির উন্নয়ন, সমৃদ্ধশালী হয়ে ওঠা এবং বিশ্বব্যাপী জাতীয় মর্যাদা বৃদ্ধি করা এবং ভূ-রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়া এই সবই দলের খুবই স্পষ্ট লক্ষ্য।’ ঐ বছরটিতে চীনে কমিউনিস্ট পার্টির শাসনের ১০০ তম বছর পূর্ণ হবে।

দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া, শেনঝৌ-১৪ মহাকাশযানে থাকা একজন ক্রু গত মাসে তিয়াংগং মহাকাশ স্টেশনে ছয় মাসের কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা চীনকে সামরিক নিরাপত্তার কারণে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ব্যবহারে বাধা দেয়, যার ফলে ১০ বছর আগে চীন নিজে থেকেই যাত্রা শুরু করে। ১৯৬০-এর দশকে চীন তার বিস্তৃত মহাকাশ কর্মসূচী শুরু করে।

সিনহুয়া জানায়, চীনের মহাকাশ স্টেশনটি একটি "বহুমুখী স্পেস ল্যাব" হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা বিভিন্ন মহাকর্ষীয় স্তরে জৈবিক বৃদ্ধি পদ্ধতির তুলনা করার মতো পরীক্ষার জন্য ২৫ টি "ক্যাবিনেট" ধারণ করতে পারে।

স্টেট কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিস জানুয়ারীর এক প্রোগ্রামে মতামত হিসেবে বলেছে,অন্যান্য স্পেস স্টেশনে এবং স্পেস প্ল্যাটফর্মগুলির মতো এটিও জীববিজ্ঞান, জীবন ব্যবস্থা, ঔষধ এবং উপাদান নিয়ে গবেষণায় ‘মানবতার মৌলিক বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারে’ কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে অনেক দেশ চীনের স্যাটেলাইট পরিষেবাগুলো ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ‘বেইডু’ স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম। দুই বছর আগে সেটি পাকিস্তানকে ব্যবহার করতে দেয়া হয়। এই পদ্ধতি বিপর্যয়ের পরে জরিপ এবং স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সহায়তা করতে পারে।

মহাকাশ কেন্দ্রটি পিপলস লিবারেশন আর্মিকে সহায়তা করবে কিনা সে বিষয়ে বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা কিছু বলেননি।

ওয়াশিংটনের স্টিমসন সেন্টারের চীন প্রোগ্রামের পরিচালক ইউন সান আশংকা প্রকাশ করে বলেন , যদিও চীনারা বলবে এটি আবহাওয়া বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস বা ভুপৃষ্ঠের বিভিন্ন তথ্যের জন্য কাজ করবে তবুও, "আমি মনে করি, চীনের মহাকাশ প্রযুক্তি কীভাবে পৃথিবীর দেশগুলির উপর প্রকৃত প্রভাব ফেলছে তার একটি উদাহরণ " । তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই জানি, এটি কেবল মাত্র একটি দিক।”

বিশেষজ্ঞরা ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেছেন, চীনের রয়েছে বিশ্বের তৃতীয় শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী। তারা এই প্রযুক্তি নিজেদের কাজে লাগাতে পারে যা পশ্চিম ও এশিয়ার ছোট দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ।

যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন রাজ্যের উইলমেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এবং চেয়ারপার্সন ইয়ান লিয়াং বলেন,"অবশ্যই বড় ডেটা এবং অন্যান্য উচ্চ-প্রযুক্তি শিল্পের ক্ষেত্রে এটি অবশ্যই চীনের স্বার্থ রক্ষা করতে সক্ষম হবে এবং সম্ভবত পরে অন্যান্য দেশেও রপ্তানি করতে সক্ষম হবে," লিয়াং বলেন।

সিনহুয়া জানায় , চীনা শেনঝু- ফোর্টিনের ক্রু মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানোর পরে গবেষণা প্রকল্প গুলি শুরু করবে এবং ল্যাব মডিউল থেকে স্পেসওয়াক এর কাজ করবে।

XS
SM
MD
LG