বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনার পর জন্ম নেয়া নবজাতকের আইনগত অভিভাবককে ১৫ দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সড়ক পরিবহন আইনের ৫৪ ধারা অনুসারে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালত বলেন, “নবজাতকের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।”
একইসঙ্গে নবজাতকের দেখভাল ও তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠন করতে সমাজকল্যাণ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দেখভাল করার জন্য কমিটি ও নবজাতকের কল্যাণে নেয়া পদক্ষেপ জানিয়ে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে আদেশে।
এর আগে, শিশুটির কল্যাণ নিশ্চিত করতে এবং পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে, সোমবার (১৮ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কানিজ ফাতেমা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করেন। রিটে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিকে বিবাদী করা হয়। মঙ্গলবার এই রিটের শুনানি হয়।
রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. রেজাউল হক ও মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন।
আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন বলেন, “নবজাতকের খরচা হিসাবে তার আইনগত অভিভাবককে আপাতত পাঁচ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নবজাতকের আইনগত অভিভাবককে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে ট্রাস্টি বোর্ডকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত শনিবার (১৬ জুলাই) বিকাল পৌনে ৩টার দিকে, জাহাঙ্গীর আলম তার আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর জন্য, কন্যা সন্তানসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হওয়ার সময় একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী রত্না বেগম ও তার মেয়ে জান্নাত মারা যায়। চাপ খেয়ে অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগমের পেটে থাকা নবজাতক শিশু সড়কেই প্রসব হয়। পরে শিশুটির বাম হাত ও গলার হাড় ভেঙে যাওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ লাবিব হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় গত ১৭ জুলাই জাহাঙ্গীরের বাবা বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় মামলা করেন।