বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায়, বিচার না করে উল্টো রাত ১০টার মধ্যে হলে ফেরার সময়সীমা বেঁধে দেয়ার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রীরা।
বুধবার (২০ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপাচার্যের ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শতাধিক ছাত্রী। এসময় তারা রাত ১০টায় হলে প্রবেশের সিদ্ধান্ত বাতিল ও ক্যাম্পাসে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
তারা চার দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। দাবিগুলো হলো; বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অকার্যকর যৌন নিপীড়ন সেল সংস্কার করে কার্যকর করা, রাত ১০টার পরে হলে প্রবেশের নির্দেশনা বাতিল করা এবং চলমান সকল হেনস্তা ইস্যুর বিচার চার কর্মদিবসের মধ্যে শেষ করা।
এর আগে গত রবিবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হল থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে যাওয়ার পথে, এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা হয়।
ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রী জানান, “প্রীতিলতা হল সংলগ্ন এলাকায় বন্ধুর সঙ্গে হাঁটছিলাম। এ সময় পাঁচ তরুণ আমাদের গতিরোধ করে জেরা করতে থাকে। একপর্যায়ে দুজন কোনো কারণ ছাড়াই মারধর করে। এছাড়া মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে এবং সেটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে, রাত সাড়ে ১০টার দিকে মানিব্যাগ ও মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ওরা চলে যায়।”
এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে, হাটহাজারী থানায় অজ্ঞাত ৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছে ঐ শিক্ষার্থী।
আন্দোলনকারীদের একজন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী ফারজানা আমিন সোনিয়া। তিনি বলেন, “আমরা চারটা দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সাম্প্রতিক ছাত্রী লাঞ্ছিত ঘটনা চার কর্মদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরিয়াল বডি প্রদত্যাগ করবেন। আমরা প্রতিশ্রুতি পেয়ে আন্দোলন থেকে সরে এসেছি। এখন তা বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছি।”
ছাত্রী হেনস্তাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান জানান, “আগামী চার কর্মদিবসের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের নিয়ে পদত্যাগ করবো, এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর আন্দোলন থেকে সরে আসে ছাত্রীরা।”