বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায়, হত্যা চেষ্টার অভিযোগে, ২০০২ সালে সাতক্ষীরায় দায়ের করা মামলায় দণ্ডিত চার ব্যক্তির আপিল, শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। ঐ সময় শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। আদালত একই সঙ্গে, ঐ চার ব্যক্তির অর্থদণ্ড স্থগিত করে মামলার নথি তলব করেছেন। তবে আদালত তাদের জামিন আবেদন অগ্রাহ্য করেছেন।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দণ্ডিত চার ব্যক্তির আবেদনের শুনানি করে, বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত চার জন হলেন; মো. ইয়াসিন আলী, মো. তোফাজ্জল হোসেন, মো. আব্দুস সাত্তার ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। দণ্ডিতদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, “শুনানির জন্য তাদের আবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত। জরিমানা স্থগিত করেছেন। কিন্তু জামিন দেননি।”
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ধর্ষণের শিকার হন। ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট, শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ঐ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে, মাগুরায় যাচ্ছিলেন। কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহর পৌঁছালে, একদল দৃর্বৃত্ত লাঠিসোঁটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এসময় তারা গুলিবর্ষণ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায়, বিরোধীদলীয় নেতা রক্ষা পেলেও, তার গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবনসহ অনেকে আহত হন। কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনায় আহত হন। ঐ দিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন।
২০১৫ সালে এ ঘটনায় আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। বিচার প্রক্রিয়া শেষে, সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন। বাকি ৪৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। পরে, দণ্ডিত ব্যক্তিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।