রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া, উভয়ই অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দ্বারা বেষ্টিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বারা প্রদত্ত নিয়ম-ভিত্তিক আদেশের বিরুদ্ধে তারা একে অপরকে সাহায্য করার উপায় খুঁজছে বলে মনে হচ্ছে ।
ইউক্রেন আক্রমণের পাঁচ মাস পর, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র এবং তার অংশীদারদের দ্বারা একের পর এক নিষেধাজ্ঞার শিকার হচ্ছে।
মঙ্গলবার ব্রিটেন রাশিয়ার কর্মকর্তাদের উপর নতুন সর্বসাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে। সপ্তাহ আগে,২৮ জুন, যুক্তরাষ্ট্র ৭০টি প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পে যুক্ত।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ষষ্ঠ দফা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যার মধ্যে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, শীর্ষ কর্মকর্তা এবং তেল রপ্তানি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং ১৭ জুলাই একটি সপ্তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ প্রস্তাব করেছে যা রাশিয়ার সোনা এবং দ্বৈত-ব্যবহার যোগ্য পণ্য ও প্রযুক্তির একটি বর্ধিত তালিকাকে প্রভাবিত করবে।
নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন
মিত্র কমে যাওয়ায় মস্কো এখন নতুন অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুঁজছে।
উত্তর কোরিয়ায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মাতসেগোরা ১৯শে জুলাই রাশিয়া্র দৈনিক পত্রিকা ইজভেস্টিয়ার সাথে একটি সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন যে ইউক্রেনের যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ডনবাস অঞ্চলের পুনর্গঠনের জন্য মস্কো উত্তর কোরিয়ার কর্মী নিয়োগ করতে পারে, ডনবাস অঞ্চল এখন মূলত রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। মস্কো টাইমসের মতে, পিয়ংইয়ং এই অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
একই দিনে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগের সমন্বয়কারী জন কারবি মন্তব্য করেছেন, "এতে দেখা যাচ্ছে যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কতটা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন। এখন তাকে উত্তর কোরিয়ার দিকে ফিরে যেতে হবে"।
ভয়েস অফ আমেরিকার কোরিয়ান সার্ভিস ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাস এবং মস্কোর পররাষ্ট্র মন্ত্রকের সাথে যোগাযোগ করে মাৎসেগোরার মন্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য অনুরোধ করে কিন্তু কোনো উত্তর পায়নি। তাছাড়াও জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার মিশনের সাথে যোগাযোগ করে মাৎসেগোরার মন্তব্য নিশ্চিত করার অনুরোধ করেও কোন উত্তর পায়নি।
নতুন করে সহযোগিতা
বিশেষজ্ঞরা রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার মধ্যে পারস্পরিক সুবিধাগুলি লক্ষ্য করছেন, উভয়ই যুক্তরাষ্ট্র এবং সমমনা দেশগুলির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নিয়মগুলি ভঙ্গ করতে ইচ্ছুক।
ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের পূর্ব এশিয়ার উপর ফোকাস করা একজন কর্মী প্যাট্রিসিয়া কিম বলেছেন, "দুটি রাষ্ট্র তাদের নিজ নিজ পরিস্থিতিতে স্পষ্ট সমান্তরাল দেখতে পায় এবং নিষেধাজ্ঞা ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন 'পশ্চিমী আদেশ'-এর বিরোধিতায় একটি অভিন্ন কারণ খুঁজে পায়।"
বিশ্লেষকরা বলছেন্ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মস্কো এবং পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে এক সময়কার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অবনতি ঘটলেও ইউক্রেন যুদ্ধ তাদের আবার একত্রিত করছে।