মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বিরোধী ও অধিকার সংস্থাগুলো বলছে যে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে দেশব্যাপী প্রতিরোধের বিরুদ্ধে, সামরিক জান্তার সহিংস দমনপীড়ন আরম্ভ হওয়ার দেড় বছর পরও, দেশটির তেল ও গ্যাস থেকে হওয়া বিপুল মুনাফা সামরিক জান্তার হাতে যাওয়া এবং তাদের টিকে থাকতে সাহায্য করা অব্যাহত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান সংখ্যক আইনপ্রণেতার সাথে মিলে তারা এমন আহ্বান জোরালো করেছে যে, জান্তার ঐ আয় বন্ধ করতে যাতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করে। আশা করা হচ্ছে এমন করা হলে, সামরিক বাহিনীর ডলার সংকট দেখা দিবে, যেই ডলারগুলো তারা নিজেদের অস্ত্র কিনতে ব্যবহার করছে।
আর্থ রাইটস ইন্টারন্যাশনাল একটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা যারা দেশটির জ্বালানী খাত নিয়ে গবেষণা চালায়। সংস্থাটির মিয়ানমার নীতি ও আইনী বিষয়ক উপদেষ্টা, বেন হার্ডম্যান বলেন যে, জান্তার জন্য “ঐ বৈদেশিক মুদ্রার সহজলভ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”।
তিনি বলেন, “আপনি যদি অস্ত্র, বিমানের জ্বালানী, মিয়ানমারের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় এই জিনিসগুলো কিনতে চান, তাহলে তাদের [জান্তার] ইউএস ডলার বা আন্তর্জাতিক মুদ্রার প্রয়োজন।”
বিশ্বব্যাংক এবং নরওয়ের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা নোর্যাড, সামরিক অভ্যুত্থানের আগে মিয়ানমারের সরকারি তথ্য ব্যবহার করে করা এক অনুমানে দেখেছিল যে, তেল ও গ্যাস থেকে বার্ষিক আয়ের পরিমাণ ছিল ১৫০ কোটি ডলার। এর বেশিরভাগই রয়্যালটি, ফি এবং বেশ কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্র ও সরবরাহ লাইনে কোম্পানীটির শেয়ার থেকে পাওয়া মুনাফা হিসেবে, মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজ (এমওজিই) এর কাছে যায়। ঐ সরবরাহ লাইনগুলো প্রতিবেশি চীন ও থাইল্যান্ডে জ্বালানী রফতানি করতে ব্যবহার করা হয়, যার বেশিরভাগই থাইল্যান্ডে রফতানি করা হয়।
হার্ডম্যান বলেন যে, ঐ আয় সরকারের মোট আয়ের এক-দশমাংশ এবং তাদের নগদ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ঠিক অর্ধেক। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে ক্রমবর্ধমান গ্যাসের মূল্য এবং ভেঙে পড়তে থাকা অভ্যন্তরীন অর্থনীতির মানে হল যে, সেগুলো হয়ত এখন মোট ও বৈদেশিক আয়ের আরও বড় অংশ হয়ে উঠেছে।