অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

খুলনার কয়রায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা


কয়রায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা
কয়রায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা

টিকে থাকার লড়াইয়ে নেমেছে বাংলাদেশের খুলনা জেলার কপোতাক্ষ পাড়ের মানুষ। জেলার কয়রায় স্বেচ্ছাশ্রমে কপোতাক্ষ নদের ভেঙে যাওয়া রিংবাঁধ নির্মাণ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকাল ৭টা থেকে বাঁধ নির্মাণে, স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেছেন উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার মানুষ।

এলাকাবাসী জানান, গত ১৭ জুলাই ভোর রাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪/১ প্লোডারের দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চরামুখা খালের গোড়া এলাকার বেড়িবাঁধের প্রায় ২০০ মিটার ভাটার টানে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরদিন ১৮ জুলাই স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকার প্রায় দুই হাজার মানুষ রিংবাঁধ দিয়ে পানি আটকাতে সক্ষম হন। গত রবিবার (১৪ আগস্ট) বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে পুনরায় রিংবাঁধ ভেঙে কপোতাক্ষ নদের লোনা পানি বিস্তীর্ণ এলাকায় ঢুকে পড়ে।

তারা জানান, নদী ভাঙনে ঘর-বাড়ি, জমি-জমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ১০ গ্রামের বাসিন্দারা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ঐ ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। অনেকেই পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।

দক্ষিণ বেদকাশী গ্রামের আক্তারুল ইসলাম বলেন, “নদী ভাঙনের কারণে আমার ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। রান্না করার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাঁধ না হলে ছেলে মেয়ে নিয়ে কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। সে কারণে সকলের সাথে বাঁধ গড়ার কাজ করছি।”

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. মাসুদ রানা বলেন, “পানিতে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ১০ গ্রাম তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে তিন হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের এবং ডুবে গেছে আমনের বীজতলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৫ হাজার মানুষ। ক্ষতির পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে।”

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, “কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এই ভোগান্তি।”

তিনি বলেন, “কয়রায় নদী ভাঙনের কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে রাস্তাঘাটে কিংবা পরের জমিতে আশ্রয় নেন। অনেকে আবার সর্বস্ব হারিয়ে ভাসমান হয়ে শহর-বন্দরে পাড়ি দেন। যাদের প্রকৃত হিসাব, সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে নেই। শুধু দক্ষিণ বেদকাশী নয়, উপকূলীয় এ উপজেলার আড়াই লক্ষাধিক মানুষকে নদীভাঙনের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হয়।”

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ণের বোর্ডের (বিভাগ-২) উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পুর) মো. মশিউল আবেদিন বলেন, “প্রাথমিকভাবে ভেঙে যাওয়া রিংবাঁধ মেরামতের মাধ্যমে পানি আটকানোর জন্য মানুষ কাজ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে বস্তা ও বাঁশ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। পানি আটকানোর পর মূল ক্লোজারে কাজ করা হবে।”

XS
SM
MD
LG