সদ্য উদ্বোধন হওয়া কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাস, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে `নিরবচ্ছিন্ন সুসম্পর্ক' তৈরি করবে। সাউথ ক্যারোলিনার কংগ্রেসম্যান জো উইলসন প্রতিনিধি পরিষদে দেয়া তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার ও মানবিক চ্যালেঞ্জসহ প্রধান সমস্যাগুলো মোকাবেলায়, আমাদের যৌথ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় রয়েছি।”
যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের বাংলাদেশ ককাসের সহ-সভাপতি হিসেবে কংগ্রেসম্যান গেরি কনোলি, ডোয়াইট ইভান্স এবং স্টিভ চ্যাবোটের এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ককাস সদস্যরা পর্যায়ক্রমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের হালনাগাদ তথ্য পাবেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই ও মানবাধিকারের প্রচারে যৌথ প্রচেষ্টার পাশাপাশি রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামের সঙ্গে দু'দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের সুযোগ পাবেন। এগুলো পারস্পারিক সম্পর্ককে দৃঢ় করতে সহায়তা করবে।
উইলসন ১৬ আগস্ট তার সহকর্মীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন।”
বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য এই ককাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই এই সম্পর্ক ১৯৭২ সালে শুরু হয়েছিল।
উইলসন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র সেই সময় থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণের যাত্রায় দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার। গত ৫০ বছরে, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নত স্বাস্থ্য ও শিক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নসহ উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ।”
কংগ্রেসম্যান জো উইলসন আরও বলেন, “এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে এবং এর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শুধুমাত্র তার নিজের জনগণকে উপকৃত করছে না, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।”
“বিশ্বের অন্য কোনো দেশ, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় এত বেশি শান্তিরক্ষী দেয়নি;” উল্লেখ করেন উইলসন। তিনি বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশিদের তুলনায় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেশি এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার। বাংলাদেশের রপ্তানির প্রায় ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত। এছাড়াও, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছিল ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।”
যুক্তরাষ্ট্রের জনশুমারি ব্যুরো অনুসারে, আমেরিকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করে।
উইলসন বলেন, “বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শিক্ষা বিনিময়ের প্রচার উভয় দেশের জন্য সুফল আনে। প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করছে।”