আগস্টের কোন এক সপ্তাহের এক কর্মদিবসের দুপুরে, তাইপেই এর ডজনকয়েক বাসিন্দা একটি গির্জার বেজমেন্টে অবস্থান করছিলেন। সেখানে তারা আঘাতের চিকিৎসা করা ও তাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা শিখছিলেন। এ সবই ছিল প্রাথমিক চিকিৎসার একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার অংশ। তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনের হুমকি আরও প্রবল হয়ে ওঠায় এমন ধরণের প্রশিক্ষণ আরও জরুরি হয়ে পড়েছে।
তাইওয়ানের বাসিন্দারা আতঙ্কিত নন; তারা অনেকেই বহুদশক ধরে চীনের হুমকি প্রত্যক্ষ করে আসছেন। তবে, তাইওয়ানের ক্রমবর্ধমান সংখ্যক মানুষ, যুদ্ধ যদি বেধেই যায়, তাহলে সেটির প্রস্তুতির জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
ফরওয়ার্ড অ্যালায়েন্স নামের এক বেসরকারি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা, ইনক উ বলেন, “চাহিদা এত বেশি যে আমরা কুলিয়ে উঠতে পারছি না।” তার প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মাসে এই ধরনের ১৫টি প্রাথমিক চিকিৎসা কর্মশালার আয়োজন করে থাকে।
ভিওএ-কে উ বলেন, “আমরা এমন হুমকির সম্মুখীন, যার সম্মুখীন এর আগে কখনো আমরা হইনি। এই মুহুর্তে, শান্তি বজায় রেখে আমাদের কষ্টার্জিত গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য এটিই আমাদের হাতে থাকা সর্বোত্তম পন্থা।”
চীন কয়েক সপ্তাহ ধরেই হুমকিমূলক সামরিক মহড়া দিয়ে তাইওয়ানকে ঘিরে রেখেছে। এর আগে এই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সংহতি প্রকাশের উদ্দেশ্যে তাইওয়ান সফর করার পর থেকেই এমন মহড়া চালাচ্ছে চীন।
এই বছরের শুরুতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকেই, এমন ধরনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মশালায় মানুষের আগ্রহ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে, উ জানান। তাইওয়ানের অনেকের মনেই ইউক্রেনের দুর্দশা দাগ কেটেছে, কারণ এই দুই দেশই তুলনামূলকভাবে অনেক বৃহদাকার ও কর্তৃত্ববাদী প্রতিবেশি দেশের হুমকির মধ্যে রয়েছে।
যদিও চীনের কমিউনিস্ট পার্টি কখনোই তাইওয়ান শাসন করেনি, তবুও তারা দাবি করে যে ২ কোটি ৪০ লক্ষ জনসংখ্যার এই দ্বীপটি চীনের একটি প্রদেশ। জনমত জরিপের তথ্যমতে, তাইওয়ানের বিপুল পরিমাণে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ চীনের সাথে একীভবনের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন।
ইউক্রেনে আক্রমণের পর করা এক জরিপে দেখা যায় যে, চীন আক্রমণ করলে তাইওয়ানের ৭৩% মানুষই অস্ত্র ধরতে প্রস্তুত রয়েছেন। তাইওয়ানের অনেকেই মনে করেন যে, নিজেদের প্রস্তুত করতে তাইওয়ান আরও বেশি কিছু করতে পারে।