বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের, তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য, তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসনের বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার।” রাষ্ট্রদূত বলেন, “তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের মাধ্যমে উদ্বাস্তুদের গ্রহণ করা একটি স্থায়ী সমাধান। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে শরণার্থী সংকটের বোঝা ভাগ করে নেওয়ার একটি উপায়।”
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সংকট: প্রত্যাবাসনের পথ’ শীর্ষক সেমিনারে জাপানের রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জাপান এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে তৃতীয়-দেশে পুনর্বাসনের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে শরণার্থীদের গ্রহণ করার জন্য একটি পাইলট কর্মসূচি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাসহ ৫৪টি পরিবার ও ২০০ জনকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি আশা প্রকাশ করেন যে, তারা ইউএনএইচসিআর-এর নির্দেশনায়, জাপানে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের আরও সম্ভাবনা বিবেচনা করতে পারে।
নাওকি বলেন, “জাপান, বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে একসঙ্গে মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য পরিবেশ তৈরি করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। তার দেশ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাহিদার প্রতি গভীর মনোযোগ দিয়ে সক্রিয়ভাবে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।”
সেমিনারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত নয়েলিন হেইজার, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের আঞ্চলিক উদ্বাস্তু সমন্বয়কারী ম্যাকেঞ্জি রো এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বক্তব্য দেন।
রাষ্ট্রদূত নাওকি বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের মৌলিক সমাধান হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা। এ লক্ষ্যে জাপান বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত থাকবে। আমরা দ্বিপাক্ষিক সংলাপের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। আমি দ্রুত প্রত্যাবাসনের জরুরি প্রয়োজন দেখছি।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, “এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয় যে, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ গত পাঁচ বছরে মানবিক অবস্থান দেখিয়েছে এবং উদারভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। জাপান অব্যাহতভাবে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের প্রতি সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করবে।”