অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জাতিসংঘ: বন্যাকবলিত পাকিস্তানে মানবিক সংকটের মাত্রা নজিরবিহীন


পাকস্তানের সন্ধু প্রদেশের শাহাদতকোর্ট জেলায় ঘর বাড় বন্যার পানতে প্লাবিত, সেপ্টেম্বর ২, ২০২২।
পাকস্তানের সন্ধু প্রদেশের শাহাদতকোর্ট জেলায় ঘর বাড় বন্যার পানতে প্লাবিত, সেপ্টেম্বর ২, ২০২২।

জাতিসংঘের এজেন্সিগুলো পাকিস্তানে বন্যার কারণে গৃহহীন ও অসহায় লক্ষ লক্ষ মানুষকে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য দ্রুত ত্রাণসামগ্রী ও কর্মীদের প্রস্তুত করছে।

গত জুন মাস থেকে পাকিস্তানে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটিতে বন্যা হয়ে এর এক-তৃতীয়াংশই পানিতে প্লাবিত হয়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ১,১০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে। ৬,০০০ এরও বেশি লোক আহত হয়েছে, ৩ কোটি ৩০হাজার গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং লক্ষ লক্ষ ভবন ও অবকাঠামোর ক্ষতি বা তা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, সেতুগুলো ভেঙ্গে যাওয়ায় এবং রাস্তাঘাটগুলো কর্দমাক্ত হওয়ায় সংকট কবলিত অনেক মানুষের কাছে পৌঁছানোর রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, বন্যার কারণে মানুষের স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলছে।

পাকিস্তানে ডব্লিউএইচও'র প্রতিনিধি পালিথা মহিপালা বলেন, বড় ধরণের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে এবং আগামী মাসগুলোতে আরও বৃষ্টিপাতে আশংকা থাকায় এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে। রাজধানী ইসলামাবাদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি সতর্ক করেছেন যে, নিরাপদ পানি ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে শিবিরগুলোতে রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের নেই।

মহিপালা বলেন, “ডায়রিয়া জনিত রোগ, ত্বকের সংক্রমণ, শ্বাসনালীর সংক্রমণ, ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে পড়ার কারণে ইতোমধ্যে ব্যাপক স্বাস্থ্যগত উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে এবং অনুমান করা হচ্ছে যে আগামী দিনগুলিতে বন্যা আরও খারাপ আকার ধারণ করবে। যা মানবিক ও জনস্বাস্থ্যের উপর আরও বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

মহিপালা বলেন, রোগ সংক্রান্ত বিষয়ের উপর বিশেষভাবে নজরদারী বাড়ানো, ক্ষতিগ্রস্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো ঠিকঠাক করা এবং পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ও মানসিক অসুস্থতার জন্য সহায়তা অবশ্যই সহজলভ্য করতে হবে।

তিনি বলেন, বর্ষা মৌসমের বৃষ্টি ও বন্যায় প্রায় দুই হাজার সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যপরিসেবা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্লিনিকগুলির ক্ষতি এতটাই হয়েছে যে সেখানে অসুস্থ এবং আহত ব্যক্তিদের যে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় তা দেওয়ার ক্ষমতা ক্লিনিকগুলোর নেই।

মহিপালা বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের অভাব এবং চিকিৎসা সামগ্রীর সীমিত সরবরাহের ফলে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে যা শিশু, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

XS
SM
MD
LG