যুক্তরাষ্ট্র বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী সম্রাজ্ঞির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। প্রেসিডেন্ট এবং রাজনীতিবিদরা রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের একক জীবন এবং কৃতিত্ব স্মরণ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, " মহিমান্বিত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ একজন সম্রাটের চেয়েও অধিক ছিলেন। তিনি একটি যুগকে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। ক্রমাগত পরিবর্তনশীল বিশ্বে, তিনি ছিলেন স্থির উপস্থিতি এবং ব্রিটিশদের প্রজন্মের পর প্রজন্মের জন্য স্বস্তি ও গর্বের উৎস"।
বাকিংহাম প্যালেস বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘোষণা করে যে ৯৬ বছর বয়সী রাণী স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলে শান্তিপূর্ণভাবে মারা গেছেন। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তার বড় ছেলে চার্লস। তিনিই এখন রাজা।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং তার স্ত্রী মিশেল ওবামাও বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে রানীকে স্মরণ করেছেন।
ওবামা বলেন, "অনেকের মতো, মিশেল এবং আমি রাণীর নিবেদিত নেতৃত্ব প্রত্যক্ষ করতে পেরে কৃতজ্ঞ, এবং আমরা তার অক্লান্ত, মর্যাদাপূর্ণ জনসেবার উত্তরাধিকার দেখে বিস্ময়ে বিমুগ্ধ" ৷
রাণীর ৭০ বছরের রাজত্বকালে, তিনি হ্যারি এস ট্রুম্যান থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ জন প্রেসিডেন্টের সাথে কাজ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য ১৯৭৬ সালে একটি সফর সহ একাধিকবার সরকারী সফরে যুক্তরাষ্ট্রে তাকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। ১৯৯১ সালে তিনি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেন। এবং ২০০৭ সালে তিনি জেমসটাউন প্রতিষ্ঠার ৪০০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ভার্জিনিয়ায় যান। জেমসটাউন ছিল আমেরিকায় ইংরেজদের প্রথম স্থায়ী বসতি।
হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এক বিবৃতিতে বলেছেন, "রাণী এলিজাবেথের শক্তি এবং সৌজন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তার অসাধারণ জীবন এবং নেতৃত্ব তরুণী এবং মেয়েদেরকে জনসেবায়, বর্তমান এবং আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রাণিত করবে।"
হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস আগামী মঙ্গলবার রানীকে সম্মান জানিয়ে একটি শোক প্রস্তাব পাস করবে। পেলোসি আদেশ দিয়েছেন যে রাণীর মৃত্যুর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলের উপর পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
সেনেটে সংখ্যালঘু দলের নেতা মিচ ম্যাকনেল এক বিবৃতিতে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এই ২১ শতক অবধি দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে, ১৫ জন প্রধানমন্ত্রীর সরকার পেরিয়ে, বড় বড় চ্যালেঞ্জ ও বড় বড় বিজয়ের মধ্য দিয়ে রাণীর স্থিতিশীল নেতৃত্ব সেই ভূমিকে নিরাপদে রেখেছে যাকে তিনি ভালোবাসতেন।
বৈশ্বিক পরিমাপেও নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে রাণীর অবদানের প্রশংসা করা হয়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, “রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে তাঁর মার্জিত আচরণ সম্মান ও অবদানের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসা করা হয়। আফ্রিকাও এশিয়ায় ঔপনিবেশিকতার পরিসমাপ্তি এবং করমনওয়েলথ’এর বিবর্তনসহ কয়েক দশকের বড় রকমের পরিবর্তনের সময়ে তাঁর উপস্থিতি সবাইকেদিয়েছে নিশ্চয়তা”।
তিনি আরও বলেন “রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ছিলেন জাতিসংঘের অকৃত্রিম বন্ধু এবং ৫০ বছরের ব্যবধানে তিনি দু’বার এসেছিলেন নিউ ইয়র্কে আমাদের সদর দপ্তরে। তিনি বহু দাতব্য ও পরিবেশের পক্ষে গভীর ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন এবং গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ২৬ সম্মেলনে প্রতিনিধিদের সামনে সাড়া জাগানো ভাষণ দেন।